ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্ট্রার (এনইআইআর) সংস্কার, সিন্ডিকেট প্রথা বিলোপ এবং মোবাইল ফোন আমদানির সুযোগ উন্মুক্ত করাসহ কয়েক দফা দাবিতে সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট শুরু করেছেন মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীরা।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) সকাল থেকে এ কর্মসূচি কার্যকর হয়েছে। এর ফলে রাজধানীর মোতালেব প্লাজা, ইস্টার্ন প্লাজাসহ দেশের অধিকাংশ মোবাইল মার্কেট ও দোকানপাট বন্ধ রয়েছে।
দোকান বন্ধ রাখার পাশাপাশি দাবি আদায়ে ব্যবসায়ীরা রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করছেন।
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে এই ধর্মঘটের ডাক দেয় মোবাইল ব্যবসায়ীদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি’ (এমবিসিবি)।
এমবিসিবির সাধারণ সম্পাদক আবু সায়ীদ পিয়াস জানান, রোববার সকাল থেকেই সারা দেশে মোবাইল ফোনের দোকান বন্ধ রাখা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা দলে দলে বিটিআরসি কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে।
আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে এনইআইআর বা মোবাইল ফোন নিবন্ধনের কড়াকড়ি নিয়ম চালু হওয়ার কথা রয়েছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, কোনো পূর্ব-পরামর্শ ছাড়াই হঠাৎ এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ঘোষণা বাজারে চরম অস্থিরতা তৈরি করেছে। তাদের মতে, এনইআইআরের বর্তমান কাঠামো বহাল থাকলে এবং গুটিকয়েক ব্যবসায়ীকে একচেটিয়া সুযোগ দিলে সাধারণ ব্যবসায়ীরা পথে বসবেন।
ব্যবসায়ী নেতাদের দাবি, দেশের মোবাইল ফোন ব্যবসার মার্কেট শেয়ারের ৭০ শতাংশ যাদের হাতে, তাদের সঙ্গে আলোচনা না করেই একতরফাভাবে এনইআইআর চালু করা হচ্ছে। তারা এনইআইআরের বিপক্ষে নন, তবে তারা এর সংস্কার, ন্যায্য করনীতি এবং মুক্ত বাণিজ্যের সমান সুযোগ চান।
ব্যবসায়ীরা জানান, বিটিআরসির বর্তমান নীতিমালায় বলা আছে কোনো বিদেশি ব্র্যান্ড যদি স্থানীয়ভাবে পণ্য সংযোজন করে, তবে অন্য কেউ সেই ব্র্যান্ড আমদানি করতে পারবে না। নেতাদের মতে, শুল্ক দিলেও আমদানির সুযোগ না থাকায় এটি কার্যত ‘মনোপলি’ বা একচেটিয়া ব্যবসার সুযোগ তৈরি করছে। এতে প্রতিযোগিতা কমে যাবে এবং ১৮ কোটি মানুষের বাজারের নিয়ন্ত্রণ গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠানের হাতে চলে যাবে। ফলে গ্রাহক পর্যায়ে স্মার্টফোনের দামও বেড়ে যাবে।
সংগঠনটির তথ্যমতে, এই সেক্টরে প্রায় ২৫ হাজার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং ২০ লাখের বেশি মানুষের জীবিকা জড়িত। ব্যবসায়ীদের স্টকে বর্তমানে শত শত কোটি টাকার হ্যান্ডসেট রয়েছে, যা আগামী ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে বিক্রি করা অসম্ভব। এমতাবস্থায় দাবি না মানলে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন তারা।