বেইলি রোডে আগুন, তদন্তে যা জানা গেল

রাজধানীর বেইলি রোডে গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে আলোচিত অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তদন্ত সম্পন্ন করেছে ফায়ার সার্ভিসের গঠিত তদন্ত কমিটি। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যবহার সনদ ছাড়াই ১১ বছর ধরে ভবনে বাণিজ্যিক কার্যক্রম চলছিল। ব্যবহার সনদ না থাকা সত্ত্বেও ওই ভবনের পাঁচটি রেস্তোরাঁকে ব্যবসা করার অনুমতি (ট্রেড লাইসেন্স) দিয়েছিল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। অন্যদিকে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর ভবনের একটি রেস্তোরাঁকে অগ্নিনিরাপত্তা-সংক্রান্ত সনদ দিয়েছিল। এ ধরনের অনুমতি দেওয়ার আগে রাজউক অনুমোদিত নকশা ও ব্যবহার সনদ বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজন ছিল।

এদিকে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষও (রাজউক) বেইলি রোডের আগুন নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। ওই প্রতিবেদনে রাজউক অবশ্য দায়ী করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ও ফায়ার সার্ভিসকে।

ফায়ার সার্ভিস তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, গ্যাস জমে থাকায় কেটলির শর্টসার্কিটের আগুন খুব অল্প সময়ের মধ্যে পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া ভবনটির একটি মাত্র সিঁড়িতে সিলিন্ডার রাখার কারণে মানুষ নামতে পারেনি। এ কারণে এত লোকের মৃত্যু হয়।

ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত কমিটির প্রধান, সংস্থার পরিচালক (অপারেশন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ভবনের নিচতলায় ‘চা চুমুক’ নামের কফিশপের ইলেকট্রিক কেটলির শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত। সেই আগুনটাকে অতিমাত্রায় ছড়াতে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে লিকেজের কারণে জমে থাকা গ্যাস। ৪-৫ মিনিটের মধ্যে আগুন পুরো নিচতলা গ্রাস করে নেয়। ভবনে একটা এক্সিট সিঁড়ি থাকলে এত লোক মারা যেতেন না।

তিনি বলেন, শুধু শর্টসার্কিট থেকে আগুন ধরলে এত দ্রুত ছড়ায় না। প্রথম ৪-৫ মিনিটের মধ্যেই আগুনটা ‘ডেভেলপড স্টেজে’ চলে যায়। প্রাথমিকভাবে ফায়ার এক্সটিংগুইশার দিয়ে অনেকে আগুন নেভাতে চেষ্টাও করেছেন। সেখানে একজন পুলিশও ছিলেন। কিন্তু গ্যাসের কারণে তারা ব্যর্থ হন। ৬ মিনিটের মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের প্রথম গাড়ি যখন সেখানে পৌঁছায়, ততক্ষণে পুরো নিচতলা আগুনে ব্লক হয়ে যায়।

এছাড়া ফায়ার সার্ভিস আরও জানায়, তদন্তে তারা ওই ভবনে অন্তত ১৩টি ‘ব্যত্যয়’ পেয়েছেন। ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে বেইলি রোডের ওই আটতলা ভবনে আগুন লেগে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। ঘটনা তদন্তে ফায়ার সার্ভিস, রাজউক পৃথক তদন্ত কমিটি করে।