ছোট যানবাহনের নিবন্ধন বন্ধসহ ১২ দফা সুপারিশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির

রাজধানী শহর ঢাকার যানজট নিরসনে মোটরসাইকেলসহ ছোট যানবাহনের নিবন্ধন জরুরি ভিত্তিতে বন্ধ করাসহ ১২ দফা সুপারিশ জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। ‘গণপরিবহন সংকট ঢাকার ভয়াবহ যানজটের মূল উৎস-মুক্তি চাই নগরবাসী’ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। 

রোববার (৬ অক্টেবর) সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব সুপারিশ তুলে ধরেন সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির সুপারিশগুলো হলো- ১. উন্নত সিটি বাসের ব্যবস্থা করা ২.বাস রুট রেশনালাইজেশনের মাধ্যমে বাসের জন্য প্রাধিকার লেইনের ব্যবস্থা করা। ৩. ঢাকার প্রধান প্রধান সড়ক করিডোর থেকে প্যাডেলচালিত রিকশা, ইজিবাইকসহ ধীরগতির যানবাহন চলাচল বন্ধ করা। ৪. ফুটপাত দখল মুক্ত করা, ফুটপাতে স্বাচ্ছন্দ্যে পদচারী যাতায়াতের ব্যবস্থা করা। ৫. প্রয়োজনে সড়কের মিডিয়ানে উড়াল ফুটপাত তৈরি করা। ৬. ট্রাফিক সিগন্যাল ডিজিটাল করা। ৭. আইন লঙ্ঘনের জন্য ট্রাফিক প্রসিকিউশন সিষ্টেম উন্নত বিশ্বের মতো ক্যামেরা পদ্ধতি চালু করা। ৮. জরিমানার অর্থ পরিবহন মালিক-চালকের ব্যাংক হিসাব থেকে আদায়ের ব্যবস্থা করা। ৯. প্রধান সড়কে বাইক পার্কিং, লোডিং, আনলোডিং বন্ধ করা। ১০. যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা বন্ধ করা। ১১. যত্রতত্র হাততুলে রাস্তা পারাপার বন্ধ করে জেব্রা-ক্রসিং। ১২. ফুটওভারব্রিজ, আন্ডারপাস ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা।

মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ঢাকার বাসগুলোতে তেলাপোকা-ছারপোকা থাকে, যাত্রীরা বসতে পারে না। এই পরিবেশ থেকে উত্তরণ করা উচিত। তাহলে মানুষ বাসে উঠতে আগ্রহ পাবে। নগরীর এক প্রান্ত থেকে যে কোনো গন্তব্যে যেতে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টার বেশি সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। ঢাকার যানজটে প্রতিদিন নষ্ট হচ্ছে কর্মক্ষম মানুষের ৮২ লাখ কর্মঘণ্টা। বুয়েটের তথ্য বলছে, প্রতিবছর এই যানজটে আর্থিক ক্ষতি পরিমাণ ৫০ হাজার কোটি টাকা।

মহাসচিব বলেন, রাজধানীর গণপরিবহন ব্যবস্থা বহুযুগ আগেই ভেঙে পড়েছে। নগরীতে চলাচলকারী বাস-মিনিবাস রংচটা, বিবর্ণ, লক্করঝক্কর, পেছনের লাইট-ইন্ডিকেটর আর সামনের লুকিং গ্লাস নেই। আসনে দুই পা মেলে বসা যায় না। বাসে উঠা-নামার পাদানি, ধরার হেন্ডেল ভাঙা থাকে। দীর্ঘসময় ধরে দাঁড়িয়ে গাদাগাদি করে যেতে হয়। গরমের দিনে ঘামে ভিজে এবং বর্ষাকালে বাসের ভেতর বৃষ্টিতে ভিজে যবুতবু অবস্থা হয়। কোনো বাসে পরিষ্কার-পরিচ্ছনতার বালাই নেই। 

তিনি আরও বলেন, সামর্থ্যবানরা ব্যক্তিগত গাড়ি কিনছেন। অন্যরা মোটরসাইকেলে রাইডশেয়ারিং, অটোরিকশা, ইজিবাইক পাঠাও-ওবারের মতো ছোট ছোট যানবাহনে স্বাচ্ছদ্যে যাতায়াতের দিকে ঝুঁকেছেন। ফলে নগরীতে বিশৃঙ্খল বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ৪ লাখ প্যাডেলচালিত রিকশা, ৬ লাখ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ১ লাখ ৩৪ হাজার রাইডশেয়ারিং এর ছোট ছোট যানবাহন, ৩০ হাজার সিএনজিচালিত অটোরিকশা অবাধে যাতায়াতের কারণে নগরীর যানজট ও জনজট চরমভাবে বেড়ে চলেছে।