রাজধানী ঢাকার দক্ষিণ বনশ্রীতে গরুর মাংসপ্রেমীদের জন্য চালু হয়েছে বিফ হোটেল। যেখানে প্রতিদিন বিক্রি হয় ১৭ মণের বেশি গরুর মাংস। এই হোটেলে দেশের প্রথম বিফ কিমা বিরিয়ানি পাওয়া যায়। এছাড়াও ভোজনরসিকরা এখানে স্বাদ নিতে পারবেন চট্টগ্রামের মেজবানি লাল ও কালা ভুনার। হোটেলটি পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত আছেন সবার পরিচিত মুখ কম দামে গরুর মাংস ব্যবসায়ী খলিলুর রহমান।
সরেজমিনে দেখা যায়, হোটেলের সামনেই শত শত ভোজনরসিকরা গাড়ি পার্কিং করছেন। ঢাকার বাইরে থেকেও এখানে খেতে আসছেন অনেকে। আর যারা খলিলের মাংস ক্রেতা আছেন তারাও দুপুর হলে এ হোটেলে আসেন। সবমিলিয়ে হোটেলে ভোজনরসিকদের ভিড় চোখে পড়ার মতো।
হোটেলে প্রবেশ করতেই মাংস বিক্রেতা খলিলের সঙ্গে দেখা হয়। তিনি বলেন, আমার ছেলে ও তার বন্ধু মিলে এই হোটেলে দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করে। আমি তাদেরকে সহযোগিতা করছি। আর আমার যেহেতু মাংস আছে, তাই যারা খাবেন তাদের কোনো চিন্তা নেই।
খলিল আরও বলেন, আমার তো ব্যবসা আছেই। তারপরও ছেলের কাজের সঙ্গে যুক্ত আছি। শুরুতে হোটেলবয়সহ কর্মচারী পাওয়া যাচ্ছে না। ভোজনরসিকরা নিয়মিত আসছেন, চাপ সামলাতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। এরইমধ্যে অনলাইনে অর্ডার নেয়া বন্ধ করতে হয়েছে। তবে যে কেউ চাইলে পার্সেল নিয়ে যেতে পারবেন।
এই হোটেলে মেজবানির স্বাদ পাচ্ছেন ভোজনরসিকরা। দৈনিক ১৭ মণের বেশি গরুর মাংস রান্না হয়। চাহিদা অনুযায়ী মাংসের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলেও জানালেন খলিল।
বিফ হোটেলে চিনিগুড়া চালের সাদাভাতও পাওয়া যায়। পছন্দমতো যে কেউ মেজবানি লাল বা কালা ভুনা ভাতের সঙ্গে খেতে পারবেন। আর খাবার মাটির প্লেটে পরিবেশন করা হয়। সাশ্রয়ী দামে ভালো খাবার পাওয়ায় সন্তুষ্ট ভোজনরসিকরা।
রান্নাঘরে বাবুর্চিদের ব্যস্ততার কমতি নেই। চট্টগ্রামের বাবুর্চি মফিজুর রহমান এক হাতেই সব রান্না সামলে নিচ্ছেন, সঙ্গে ৫ জন সহযোগী আছেন। এই হোটেলে লাকড়ি দিয়ে রান্না হয়। রান্নার মাঝেই বা মফিজুর বলেন, সবাই খেতে আসছেন। আমরা ভালো সাড়া পাচ্ছি। আমাদেরও খুব ভালো লাগছে।
লাকড়ি দিয়ে রান্নার বিষয়ে বাবুর্চি বলেন, আমি লাকড়ি দিয়ে রান্না করতে পছন্দ করি। এজন্য শুরুতেই মালিককে বলেছি, লাকড়ি দিতে হবে। লাকড়ি দিয়ে রান্না করা খাবারের স্বাদই আলাদা। আপনারা একবার খেলেই বুঝতে পারবেন।
এই হোটেলের বিফ কিমা বিরিয়ানি সবার কাছে পছন্দের। অনেকে হোটেলে খাওয়ার পর পার্সেলও নিয়ে যাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ পরিবার নিয়ে হোটেলে খেতে আসছেন। তাদেরই একজন তালেবুর রহমান। তিনি বলেন, খলিলকে মাংস ব্যবসায়ী হিসেবেই চিনি। কিন্তু তার ছেলে হোটেল দিয়েছে এটা জেনেই আমরা এখানে আসছি। খাবার খেতেও ভালো লেগেছে। আশা করি, খাবারের মান সবসময় ভালো থাকবে।
খলিলের ছেলে সাজ্জাদের সঙ্গেও কথা হয়। তিনি বলেন, আমরা শুরুর দিন থেকে ভালো সাড়া পাচ্ছি। প্রথমে বাবুর্চি পাওয়া নিয়ে চিন্তা ছিল। তবে আমরা চট্টগ্রামের বাবুর্চিই পেয়েছি। আমার বাবার কাছ থেকে শিখেছি কম দামে কীভাবে ভালো জিনিস মানুষকে দেয়া যায়। আমিও সেই চেষ্টা করছি। আপনারা সবাই আসুন, একবার বিফ হোটেলের খাবারের স্বাদ গ্রহণ করুন। আশা করি, সবার ভালো লাগবে।