চাকরিতে পুনর্বহালসহ ৬ দফা দাবিতে ঢাকার সচিবালয় সংলগ্ন শিক্ষা ভবনের সামনের সড়ক অবরোধ করেছেন চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সচিবালয় অভিমুখে রওনা করেন তারা। এসময় পুলিশের বাধার মুখে পড়েন তারা। এমন অবস্থায় সড়কে বসে পড়েন তারা। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট থেকে শিক্ষাভবন মোড় পর্যন্ত সড়কের উভয়পাশের যান চলাচল।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে মিছিল নিয়ে এলে শিক্ষা ভবন মোড়েই পুলিশের ব্যারিকেডের মুখে পড়তে হয়। পরে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা ব্যারিকেড ভেঙে সামনে এগিয়ে যেতে চাইলে পুলিশ জলকামান নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে বিডিআর সদস্যরা তাদের অবস্থান ধরে রাখেন। একপর্যায়ে সড়কে বসে পড়েন তারা।
এসময় বিক্ষুব্ধ বিডিআর সদস্যদের ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘তুমি কে আমি কে, বিডিআর বিডিআর’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’-ইত্যাদি বিভিন্ন স্লোগান দিতে শোনা যায়।
বিডিআর সদস্যরা বলছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত ৬ দফা দাবি মানা না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত এই আন্দোলন চলমান থাকবে।
এর আগে, মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে ৬ দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন বিডিআর কল্যাণ পরিষদ। বিডিআর সদস্যদের দাবিগুলো হচ্ছে-
১. পিলখানার ভেতরে ও বাইরে ১৮টি বিশেষ আদালত ও অধিনায়কের সামারি কোর্ট গঠন করে যেসব বিডিআর সদস্যকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তাদের চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে। একইসঙ্গে তাদের ক্ষতিপূরণ ও রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
২. এরই মধ্যে হত্যা মামলায় খালাসপ্রাপ্ত এবং সাজা শেষ হওয়া কারাবন্দি বিডিআর সদস্যদের অনতিবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। এ ছাড়া উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিস্ফোরক মামলা বাতিল করতে হবে।
৩. গঠিত কমিশন স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করার জন্য প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত ব্যতীত শব্দ এবং কার্যপরিধি ২ এর (ঙ) নং ধারা বাদ দিতে হবে। একইসঙ্গে স্বাধীন তদন্ত রিপোর্ট সাপেক্ষে অন্যায়ভাবে দণ্ডিত নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদের মুক্তি দিতে হবে। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সঠিক কারণ উদঘাটন, মূল ষড়যন্ত্রকারী, হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
৪. পিলখানায় শহীদ ৫৭ সেনা কর্মকর্তা, ১০ জন বিডিআর সদস্যসহ সর্বমোট ৭৪ জনের হত্যাকারীর বিচার নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে কারাগারে মারা যাওয়া সব বিডিআর সদস্যের মৃত্যুর সঠিক কারণ উন্মোচন করতে হবে। অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়ে থাকলে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
৫. স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ধারণকারী বিডিআর নাম ফিরিয়ে আনতে হবে।
৬. পিলখানার হত্যাকাণ্ডে সব শহীদের স্মরণে জাতীয় দিবস ঘোষণা করতে হবে। একইসঙ্গে শহীদদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।