প্রচণ্ড তাপদাহে হাঁসফাঁস জনজীবন, কোথাও নেই স্বস্তি

দেশজুড়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক তাপপ্রবাহ, হাঁসফাঁস করছেন শ্রমজীবী মানুষ থেকে শুরু করে প্রাণিকুলও। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আজ (রোববার) প্রচণ্ড গরম পড়েছে। চুয়াডাঙ্গায় আজ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আর ঢাকায় ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি বছরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

প্রচণ্ড তাপদাহে সবচেয়ে কষ্টে আছেন শ্রমজীবী ও কর্মজীবী মানুষেরা। এতে অনেকে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। পদস্থ কর্মকর্তারা শীতাতত নিয়ন্ত্রিত দফতরে অফিস করলেও খেটেখুটে খাওয়া মানুষজন তীব্র রোদ মোকাবেলা করেই কাজ করতে হয়। বিশেষ করে রাস্তার নির্মাণ শ্রমিক, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, হকার, ফুটপাতের ব্যবসায়ী, গার্মেন্টস শ্রমিক থেকে শুরু করে দিনমজুর—প্রত্যেকেই এই গরমে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। একটু বৃষ্টির অপেক্ষায় হাহাকার করছে পুরো দেশ।

মিরপুরের রিকশাচালক সবুজ হোসেন বলেন, তীব্র গরমে সর্দি ও পেট খারাপ হয়ে দুই দিন রিকশা চালাতে পারিনি। বাধ্য হয়ে এই গরমেও প্যাডেল রিকশা নিয়ে রাস্তায় বের হয়েছি। সারা দিন তীব্র গরমের মধ্যে রিকশা চালিয়ে পানি আর শরবত খেতেই অনেক টাকা চলে যায়। এত গরম জীবনেও দেখি নাই।

মতিঝিল এলাকায় শরবত বিক্রেতা আল আমিন বলেন, বেচাকেনা আগের চেয়ে এখন ভালো। এই গরমে বরফের পানির শরবতের একটু স্বস্তি পান গ্রাহকরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই গরম স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি। প্রচণ্ড গরমে হিটস্ট্রোক, ডিহাইড্রেশন ও বিভিন্ন ত্বকজনিত সমস্যাও বাড়ছে।

আবহাওয়া অফিস জানায়, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো/বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সেই সঙ্গে সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

এছাড়া চুয়াডাঙ্গা, ঢাকা, টাঙ্গাইল, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ ও যশোর জেলার ওপর দিয়ে তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি দেশের অন্যত্র মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।