যোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ‘জুলাই ৩৬ আরচ্যারী চ্যালেঞ্জ-২০২৫’ 

'২০২৪ সালের জুলাই-গণ অভ্যুত্থান'-এর স্মরণে এবং দেশকে ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত করার নেপথ্যে যারা অবদান রেখেছেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে 'জুলাই ৩৬ আরচ্যারী চ্যালেঞ্জ-২০২৫' অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (৩০ আগস্ট) কামাল আতাতুর্ক মাঠে 'জুলাই ৩৬ আরচ্যারী চ্যালেঞ্জ-২০২৫' অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ আরচ্যারী ফেডারেশনের ব্যবস্থাপনায় এবং মৌসুমী ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (কিউট)-এর পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজিত এই প্রতিযোগিতাটি জনসাধারণের মাঝে বিশেষ অনুভূতি ছড়িয়ে দেওয়ার এক অনন্য প্রয়াস।

গণ অভ্যুত্থানের বীরত্ব ও আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানিয়ে আয়োজিত এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দেশের মুক্তিকামী মানুষের চেতনাকে পুনরায় জাগ্রত করার চেষ্টা করা হয়েছে। প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া তীরন্দাজরা তাদের লক্ষ্যভেদের মধ্য দিয়ে যেন ফ্যাসিবাদমুক্তির সেই কঠিন যাত্রাকেই প্রতীকীভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।

প্রতিযোগিতা হয়েছে মিক্সড টিমে। দারুন জমে উঠেছিল আরচ্যারদের লড়াই। গোল্ড মেডেল জিতেছেন পুষ্পিতা জামাল ও মিশাদ প্রধান। তারা নীলফামারী জেলার প্রতিনিধিত্ব করেছেন। চুয়াডাঙ্গা জেলার প্রতিনিধিত্ব করে সিলভার মেডেল জিতেছেন ইতি খাতুন ও মারুফ হাসান। আর ঢাকা জেলার হয়ে খেলে ব্রোঞ্জ মেডেল পেয়েছেন আরভি আক্তার ও আশিকুজ্জামান অয়ন।‌

প্রতিযোগিতার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এবং বাংলাদেশ আরচ্যারী ফেডারেশনের সভাপতি ড. মো. মোখলেস উর রহমান। তিনি বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন এবং প্রতিযোগিতার মূল উদ্দেশ্য ও তাৎপর্য নিয়ে বক্তব্য রাখেন। 

ড. মোখলেস উর রহমান বলেন, ‘জুলাই গণ অভ্যুত্থান আমাদের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই অভ্যুত্থান দেশের জনগণকে এক নতুন পথের দিশা দিয়েছে। আরচ্যারী চ্যালেঞ্জের মাধ্যমে আমরা সেই বীরত্বকে স্মরণ করছি এবং নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করছি।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৌসুমী ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (কিউট)-এর চেয়ারম্যান এবং ওয়ার্ল্ড আরচ্যারী এশিয়ার ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট কাজী রাজীব উদ্দীন আহমেদ চপল। তিনি তার বক্তব্যে এই ধরনের আয়োজনের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের উদ্যোগকে পৃষ্ঠপোষকতা করার অঙ্গীকার করেন। 

তিনি বলেন, ‘ক্রীড়ার মাধ্যমে দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরা সম্ভব। কিউট পরিবার সবসময় এমন ইতিবাচক উদ্যোগে পাশে থাকতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আরচ্যারী ফেডারেশনের সহ-সভাপতি মালিক মোহাম্মদ সাঈদ  ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর আহমেদ। 

পুরস্কার বিতরণী পর্ব শেষে সন্ধ্যায় একই ভেন্যুতে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এটি শুধু একটি ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ছিল না, বরং গণ অভ্যুত্থানের স্মৃতিকে সম্মান জানানোর পাশাপাশি জনগণের মাঝে ঐক্য ও সম্প্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার একটি বৃহৎ আয়োজন ছিল।