সেগুনবাগিচায় ফুটপাত-সড়ক দখল করে পুরোনো ফার্নিচারের বাজার

রাজধানীর শাহবাগ থানাধীন সেগুনবাগিচা রোডের বাগিচা রেস্টুরেন্টের অপরপাশ থেকে শুরু করে মৎস ভবন পর্যন্ত সড়কের একপাশ দখল করে চলছে পুরোনো ফার্নিচারের ব্যবসা। 

সোফা, খাট, আলমারি, চেয়ার, টেবিল, শোকেস—সবকিছু সাজিয়ে রাখা হয়েছে ফুটপাত ও সড়কের ওপর। এতে পথচারীদের হাঁটার কোনো জায়গা নেই। মানুষজন বাধ্য হয়ে গাড়ির ভেতর দিয়ে চলাচল করছেন, ফলে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার বিকালে সেগুনবাগিচা রোডে সরেজমিনে দেখা গেছে, ফুটপাতজুড়ে স্তূপ করে রাখা হয়েছে নানা ধরনের পুরোনো ফার্নিচার। কোথাও সোফা একটির ওপর আরেকটি চাপিয়ে রাখা, কোথাও আবার খাটের মাথার পাটাতন ও আলমারি সারি বেঁধে সাজানো। রাস্তায় জায়গাজুড়ে টেবিল, চেয়ার, শোকেসসহ আসবাব সাজানো থাকায় পথচারীদের জন্য হাঁটার কোনো ফাঁকা জায়গা নেই। 

ফুটপাত দখল করে বসানো এসব দোকানে দেখা যায়, কয়েকজন দোকানদার চেয়ারে বসে গল্প করছেন, কেউবা মোবাইল ফোনে ব্যস্ত, আবার কেউ ক্রেতার অপেক্ষায় পণ্যের পাশে বসে আছেন। 

এদিকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা আসবাবপত্রের কারণে চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। পথচারীরা বাধ্য হয়ে গাড়ির ফাঁক দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। এতে প্রায়ই যানজট সৃষ্টি হয়, আর প্রতিনিয়ত বেড়ে যাচ্ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি। 

শুধু মূল সড়ক নয়, সেগুনবাগিচা এলাকার বিভিন্ন অলি-গলিতেও গড়ে উঠেছে এ ধরনের দোকান। গলির ভেতরেও সারি বেঁধে সাজানো থাকে পুরোনো ফার্নিচার, ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

এক পথচারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এটা মূল সড়ক। অথচ আসবাবের দোকান বসে গেছে। পুলিশ বা সিটি করপোরেশনের লোকজন মাঝে মাঝে উচ্ছেদ করলেও কয়েকদিন পর আবার দোকান বসে যায়।’

দোকানদাররা জানান, ‘আমরা মূলত পুরোনো ফার্নিচার কিনে তা বিক্রি করি। যুগের পর যুগ ধরে এখানেই আমাদের দোকান বসে আসছে। মাঝখানে কিছুদিন বন্ধ থাকলেও সম্প্রতি আবার নতুন করে দোকান চালু করেছি। আমাদের পর্যাপ্ত জায়গা নেই, তাই বাধ্য হয়েই ফুটপাত ও রাস্তায় ব্যবসা করতে হচ্ছে।’

এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাজধানীর ব্যস্ততম এ এলাকার সড়ক ও ফুটপাত দখলমুক্ত না করলে নগরজীবনে শৃঙ্খলা ফিরবে না। সেগুনবাগিচার মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়া প্রশাসনের ব্যর্থতারই বহিঃপ্রকাশ।