মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জ জেলার ভেতর দিয়ে ছোট বড় বেশ কয়েকটি নদী বয়ে গেছে। আর নদীর পাড়েই চরাঞ্চল ঘেঁষে গড়ে উঠেছে জনবসতি। তাদের জীবন-জীবিকার অন্যতম মাধ্যম হলো গবাদিপশু পালন। বিশেষ করে বাড়ির নারীরা সাংসারিক কাজের পাশাপাশি গবাদিপশু পালন করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন।
তিন উপজেলায় বেশ কয়েকটি চরাঞ্চল রয়েছে। এসব অঞ্চলে জীবিকার প্রধান উৎস হচ্ছে কৃষিকাজ। এর পাশাপাশি গবাদিপশু পালনও জীবিকার একটা অংশ হয়ে উঠেছে। বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের সবুজ প্রাকৃতিক খাবার খেয়ে গবাদিপশুগুলো বড় হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, হরিরামপুর উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন পদ্মা নদীর পাড়েই অবস্থিত, এলাকায় কয়েক হাজার মানুষের বসবাস। এখানে কৃষি কাজের পাশাপাশি বাড়ির নারীরা গবাদিপশু পালন করে থাকেন। এই পশুগুলোর দুধ চরাঞ্চলের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে সদরে বিক্রি করে আর্থিক স্বচ্ছলতাও পেয়েছে অনেকেই। এছাড়া চরবাসীরা কোরবানির জন্য গবাদিপশু মোটাতাজাকরণ করেও বছর শেষে বেশ আর্থিক সহায়তা পেয়ে থাকেন। যার কারণে চরাঞ্চলের মানুষের কাছে দ্বিতীয় আর্থিক উপার্জনের অন্যতম মাধ্যম হলো এই গবাদিপশুপালন।
পদ্মা চরের নতুন হাট এলাকার হাসনা বানু বলেন, চরাঞ্চলে আগে থেকেই বাড়িগুলোতে গরু ছাগল পালন হতো। এখন আগের চেয়ে অনেকটাই বেশি পালন হচ্ছে। কারণ কোরবানির সময় বাজারে চরাঞ্চলের গরুর চাহিদা বেশি থাকে। তাই সংসারের কাজের পাশাপাশি গরু ছাগল পালন করে আসছি।
বৃদ্ধা নাজমা বেগম বলেন, এক সময় চর অঞ্চলের মানুষের অনেক দুঃখ-দুর্দশা দেখেছি। কিন্তু এখন আর সেই অবস্থা নেই। চরাঞ্চলের মেয়ে-ছেলেরা এক সঙ্গে কাজ করে। এক সময় চরে মানুষ থাকতে চাইতো না আর এখন মানুষ কোথাও যেতে চায় না। এখন শুধু একটি ভয় নদী ভাঙন। এই ভাঙন রোধ হলে চরাঞ্চলের মানুষের কোনো চাহিদা থাকবে না।
হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান জানান, চরাঞ্চলের মানুষের আর আগের মত দুঃখ দুর্দশা নেই, তারা এখন স্বচ্ছল। চরাঞ্চলে প্রচুর কৃষি পণ্য উৎপাদিত হয়। পাশাপাশি নারীরা গবাদিপশু পালন করে পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনছে।