সব সম্পত্তি লিখে নিয়ে বৃদ্ধা মাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে সন্তানদের বিরুদ্ধে। আশ্রয়হারা হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন ৮২ বছরের হতভাগ্য এই মা। সন্তানদের এমন আচরণে কান্নায় ভেঙে পড়েন ১০ সন্তানের মা ফরিদা বেগম। ঘরবাড়ি আর সম্পত্তি হারিয়ে এখন দিশেহারা তিনি। মাদারীপুর সদর উপজেলার পৌর পেয়ারপুর গ্রামের এ ঘটনায় তোলপাড় পুরো এলাকা।
জানা যায়, স্বামী কলম গড়িয়া মারা গেছেন ৩৫ বছর আগে। এরপর মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ৪ ছেলেকেই করেছেন প্রতিষ্ঠিত। এরমধ্যে বড় ছেলে দেলোয়ার কাঁচামাল ব্যবসায়ী, মেজো ছেলে কামাল টিটিসিতে চাকরি করেন, সেজো ছেলে হেমায়েত পল্লী চিকিৎসক, আর ছোট ছেলে কাজল এলজিইডিতে টেকনিশিয়ান হিসেবে কর্মরত। এছাড়া ৬ মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন সম্ভ্রান্ত পরিবারে।
ফরিদা বেগম অভিযোগ করেন, স্বামীর দান করা ও রেখে যাওয়া ৬৭ শতাংশ ফসলি জমি বিক্রি করে সন্তানদের মানুষ করেছেন। আর বাড়ির ৪৫ শতাংশ জমি বিভিন্ন সময় কারণে-অকারণে লিখে নিয়ে গেছে সন্তানরা। সম্প্রতি সবকিছু লিখে নেওয়ার পর মারধর করে ঘরে থেকে বের করে দিয়েছে ছোট ছেলে কাজল। বড় ছেলে দেলোয়ার তার মাকে বিষ খেয়ে মরে যেতে বলেছে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ছোট ছেলে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেওয়ার পর আশ্রয় নিয়েছিলেন বড় মেয়ে সুফিয়ার বাসায়। সম্পত্তি না দেওয়ায় বড় মেয়েও বের করে দেন বাড়ি থেকে।
মাকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেওয়া আর জোর করে সব সম্পত্তি লিখে নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ফরিদা বেগমের বড় ছেলে দেলোয়ার।
তিনি বলেন, আমি জোর করে সম্পত্তি লিখে নেইনি। মা তার ১০ ছেলেমেয়েকে সম্পত্তি স্বেচ্ছায় লিখে দিয়েছেন। মাকে আমি খাবার দেই না এ কথা ঠিক না। মা আমার নামে যে অভিযোগ দিয়েছেন তা সত্য নয়।
একই দাবী ছোট ছেলে কাজলেরও। তিনি দাবী করেন, তার মায়ের মাথায় সমস্যা আছে। তাই উল্টা-পাল্টা কথা বলে।
মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল মামুন জানান, বৃদ্ধা ফরিদাকে সব ধরনের সহযোগিতা করবে প্রশাসন। আইনগত সহায়তার পাশাপাশি আর্থিক সহযোগিতাও করা হবে। এছাড়া জোর করে সম্পত্তি লিখে নিলে সেটা ফেরত আনার ব্যাপারেও প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।