সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়ার ৬৫দিন পর বুধবার (১৫ মে) ভোরে বাড়িতে ফিরেছেন খুলনার নাবিক মো. তৌফিকুল ইসলাম। জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার তিনি।
বুধবার বাড়িতে আসার পর নাবিক মো. তৌফিকুলকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন তাঁর স্বজনরা। সৃষ্টি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ। এর আগে মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে দেশের মাটিতে পা রাখেন এমভি আব্দুল্লাহর ২৩ নাবিক।
জিম্মিদশায় দীর্ঘ সময় কাটানোর পর স্বজনরা তৌফিকুল ইসলামকে কাছে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। কেউ কেউ খুশিতে কাঁদতে থাকেন। ইঞ্জিনিয়ার তৌফিকুলের বাবা ইকবাল হোসেন, মা দিল আফরোজ, স্ত্রী জোবায়দা নোমান এবং সন্তান তাসফিয়া তাহসিনা ও আহমেদ রুসাফি তাকে ফিরে পেয়ে যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছেন।
তৌফিকুলের মেয়ে তাসফিয়া তাহসিনা ও ছেলে আহমেদ রুসাফি দৈনিক খবর সংযোগকে জানান, বাবাকে নিয়ে পুরো খুলনা শহর ঘুরে দেখতে চায়। মেজো ভাই খালেদুল ইসলাম খালেদ বলেন, আল্লাহর অশেষ রহমত এবং সকলের দোয়া ছিল। সরকার ও মালিকপক্ষের প্রচেষ্টায় আমার ভাই মুক্ত হয়েছে। আমরা সকলের কাছে চিরকৃতজ্ঞ। এখন আমরা তার ফিরে আসার অপেক্ষায় আছি। এই কয়দিন খুবই দুশ্চিন্তার মধ্যে ছিলাম, এখন স্বস্তিতে আছি। ভোরে যখন সংবাদটি শুনি তখন দুশ্চিন্তা কেটে গেছে। আমরা এখন আনন্দিত।
নাবিক মো. তৌফিকুল ইসলাম দৈনিক খবর সংযোগকে বলেন, সরকার ও মালিকপক্ষের প্রচেষ্টায় আমরা মুক্ত হয়েছি। সাথে ছিল আপনাদের দোয়া। আপনাদের সকলের কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ।
জলদস্যুদের ব্যাপারে তৌফিকুল বলেন, জলদস্যুদের লাইফস্টাইলটা কেমন যেন। তাদের খাওয়া-দাওয়া একটু ভিন্নরকম। অনেকটা আদিবাসীদের মত। ধর্মে তারা ইসলাম বললেও মুসলিম সম্প্রদায়ের কোনো চরিত্রের সাথে মিল ছিল না তাদের।
তিনি আরও বলেন, তারা আমাদের স্বাভাবিক কাজকর্মের বাধা না দিলেও ভয় বা একটু চাপের ভেতরে রেখেছে শুধুমাত্র তাদের ব্যবসায়ী উদ্দেশ্যে। তবে আমাদের ওপরে শারীরিক কোন অত্যাচার করেনি বরং নিয়মিত নামাজ ও রোজা রাখতে সুযোগ দিয়েছে।
মুক্তিপণের ব্যাপারে নাবিক তৌফিকুল জানান, এটা সম্পূর্ণ কোম্পানি জানে, আমাদের কিছু জানার সুযোগ ছিল না।