ধর্ষণের পর জুলাই শহীদের মেয়ের আত্মহত্যা, তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ

পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলায় জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ জসিম হাওলাদারে মেয়েকে ধর্ষণে সরাসরি অংশগ্রহণ করে তিন কিশোর। এ সময় ভুক্তভোগীর বিবস্ত্র ছবিও তোলে তারা। আদালতে জমা দেওয়া পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

শুক্রবার (২৩ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকির হোসেন।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকার ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো আলামতে আসামি সাকিব মুন্সী, সিফাত মুন্সী ও ইমরান মুন্সীর ডিএনএ প্রোফাইল শনাক্ত হয়েছে। আসামিদের জবানবন্দি ও পুলিশের তদন্তে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, অভিযুক্ত তিন কিশোর সরাসরি ধর্ষণে অংশ নিয়েছে। এ ছাড়া এ ঘটনায় পর্নোগ্রাফি তৈরির প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। 

ঘটনার বিবরণে পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সহপাঠী ইমরান ভুক্তভোগী কলেজছাত্রীকে বাগানে নিয়ে ধর্ষণ করে। বাড়ি যাওয়ার পথে চিৎকারের শব্দ শুনতে পেয়ে সেখানে হাজির হন সাকিব ও সিফাত। বিষয়টি সবাইকে বলে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তারাও ইমরানের সহযোগিতায় পালাক্রমে ওই কলেজছাত্রীকে ধর্ষণ করে। এ ছাড়া আসামি সিফাত নিজের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে ভুক্তভোগীর বিবস্ত্র ছবি তোলে। তদন্ত শেষে তিন কিশোরকেই নারী ও শিশু দমন নির্যাতন আইনে অভিযুক্ত করা হয়।

এ বিষয়ে দুমকি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাকির হোসেন বলেন, এরই মধ্যে পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, জুলাই বিপ্লবে ১৯ জুলাই ঢাকার মোহাম্মদপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন জসিম। পেশায় তিনি ছিলেন একজন গাড়ী চালক। এরপর তাকে গ্রামের বাড়ী পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের নলদোয়ানি গ্রামে দাফন করা হয়। গত ১৮ মার্চ দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন তার কলেজপড়ুয়া মেয়ে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নিজে বাদী হয়ে দুই কিশোরের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। 

এরপর গত ২৬ এপ্রিল রাত ৯টার দিকে রাজধানীর শেখেরটেক এলাকার একটি ভাড়াটিয়া বাসায় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সে। ২৭ এপ্রিল তার শহীদ বাবার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়। শহীদের দুই মেয়ে ও এক ছেলে ছিল।