রাজশাহীর খুচরা বাজারে বেড়েছে মসলার ঝাঁজ

ঈদুল আজহা সামনে রেখে রাজশাহীর খুচরা বাজারে বেড়েছে মসলার ঝাঁজ।  লবঙ্গ, দারুচিনি, এলাচ ও জিরাসহ বিভিন্ন মসলার দাম এক মাসের ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ২০০ টাকা পর্যন্ত। এলাচ, জিরা, আদা ও রসুনের ক্ষেত্রে এই ঊর্ধ্বগতি সবচেয়ে বেশি। ঈদের রান্নায় যে মসলাগুলো সুবাস ছড়াবে, সেগুলো এখন রূপ নিয়েছে বিলাসিতায়। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা।

বিক্রেতারা বলছেন, মসলার আমদানি অব্যাহত থাকলেও আগের উচ্চ দামে কেনা পণ্য বিক্রি করছেন তারা, ফলে খুচরা বাজারে দাম বাড়তির দিকে।

ঈদুল আজহা ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে দেশের খুচরা বাজারে মসলার দামে নতুন করে ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে বলে ক্রেতাদের অভিযোগ। এই মূল্যবৃদ্ধি স্বাভাবিক নয়, বরং ঈদের আগে ইচ্ছাকৃতভাবে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে দাম বাড়ানো হচ্ছে।

রাজশাহীর সাহেববাজার, মাস্টারপাড়া ও হড় গ্রামসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক মাস আগেও এলাচের কেজি ছিল ৪৬০০ টাকা, এখন তা বেড়ে হয়েছে ৪৮০০ টাকা। প্রতি ১০০ গ্রামে বেড়েছে ২০ টাকা। জিরার দাম ৫৫০ থেকে ৬০০ এবং ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা হয়েছে। ধনিয়ার দাম অবশ্য স্থিতিশীল রয়েছে- পাইকারি বাজারে ১৪২ ও খুচরায় ১৯০ টাকা কেজি।

Mosla (1)

আদা ও রসুনের দামেও বড় ধরনের বৃদ্ধি দেখা গেছে। মানভেদে আদা এখন বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে। আর রসুন ১২০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে, যেখানে এক মাস আগেও এর দাম ছিল ৭০ টাকা। তবে তেজপাতা, দারুচিনি, কিশমিশ, বাদামজাতীয় পণ্যের দাম তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল, কিছু কিছু ক্ষেত্রে সামান্য কমেছে।

রাজশাহীর সাহেববাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী আবু হানিফ বলেন, আমরা বড় অর্ডারে মাল কিনি, তাই পাইকারি দামে তেমন পরিবর্তন নেই। কিন্তু পরিবহণ, ভাঙানো ও সংরক্ষণের খরচ যোগ হওয়ায় খুচরা দাম কিছুটা বাড়ে।’

মাস্টারপাড়ার আরেক পাইকারি ব্যবসায়ী সনি হোসেন বলেন, ঈদের আগে চাহিদা বাড়ে ঠিকই, তবে আমদানিও স্বাভাবিক। খুচরা পর্যায়ে অনেকেই বেশি মুনাফা রাখতে গিয়ে দাম বাড়িয়ে দেন।

খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, আগের বেশি দামে কেনা পণ্য এখনো বিক্রি করতে হচ্ছে। গত মাসে যে দামে মাল এনেছি, এখনো তা বিক্রি করছি। অল্প করে বিক্রি করতে হয়, তাই দাম কিছুটা বেশি পড়ে।

ঈদের বাজার করতে এসে অনেক ক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সাহেব বাজারে আসা গৃহিণী তানিয়া খাতুন বলেন, ঈদ এলেই সবকিছুর দাম বাড়ে, কিন্তু আয় তো বাড়ে না। বাজারে গেলে মনে হয় শুধু ঠকতেই আসছি।

একই বাজারে আসা আমজাদ হোসেন বলেন, ‘গত এক বছরে মসলার দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। এখন ৩০–৫০ টাকা কমলেও তেমন স্বস্তি নেই।’

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের রাজশাহী বিভাগের সহকারী পরিচালক ফজলে এলাহি বলেন, ‘আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছি। কোনো অসাধু ব্যবসায়ী কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করলে ব্যবস্থা নিচ্ছি। মসলার বাজার আমদানিনির্ভর হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারের প্রভাব রয়েছে। তবে গত কয়েক মাসে বৈশ্বিক বাজারে দাম স্থিতিশীল থাকায় দেশে তেমন প্রভাব পড়েনি।’