শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টায় গণপিটুনিতে নিহত যুবক, পরিবার বলছে ভিন্ন কথা

বরিশাল নগরীতে চার বছরের শিশুকে ধর্ষণ চেষ্টায় অভিযুক্ত সুজনকে (২৪) পিটিয়ে মেরেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। শনিবার (১৫ মার্চ) সন্ধ্যায় নগরীর ধান গবেষণা রোডে স্থানীয়রা তাকে আটক করে গণধোলাই দেয়। এরপর রাত ৮টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (শেবাচিম) চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। 

নিহত সুজন নগরীর ২৪ নং ওয়ার্ড ধান গবেষণা জিয়া নগর এলাকার মোঃ মনিরের ছেলে।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান। তবে নিহতের স্বজনরা বলছে পূর্ব শত্রুতার জেরে সুজনকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুর মা শিলা বেগম শনিবার সন্ধ্যায় থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন।

এজহারে উল্লেখ করা হয়েছে, শুক্রবার দুপুর দেড়টার দিকে ভূক্তভোগীকে একটি রান্নার পাত্র ফেরত দিতে প্রতিবেশী সুজনের বাড়িতে পাঠায়। তখন ঘরের খোলা দরজা দিয়ে ওই শিশু ভিতরে প্রবেশ করে। সুজন ঘরে একা অবস্থান করছিলেন। এসময় শিশুকে ধর্ষণ চেস্টা চালায় সুজন। তখন শিশু ডাক চিৎকার দিলে অভিযুক্ত পালিয়ে যায়। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, শনিবার ভূক্তভোগীর মা কোতয়ালী মডেল থানায় একটি অভিযোগ দেয়। অভিযোগের পর পুলিশ ওই এলাকায় তদন্তে যায়। এ খবরে স্থানীয়রা সুজনকে পুলিশে দিতে আটক করে। এসময় তাকে গণধোলাই দিলে সুজন মারা যান।

নিহত সুজনের ভাই আকাশ বলেন, সুজন একটি মাদকের সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত ছিলো। গত এক মাস পূর্বে তাদের সঙ্গ ত্যাগ করলে তাকে বেধড়ক মারধর করে। পরে এক মাস তাদের সাথে কোনো যোগাযোগ করেনি। কিন্তু মাদক সিন্ডিকেটের সদস্যরা সুজনকে বিভিন্ন সময়ে ফোন দিয়ে ডাকতো। এরই জেরে শনিবার সুজনকে ঘর থেকে ঢেকে নিয়ে মাঠে ফেলে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। 

আকাশ আরও বলেন, ধর্ষণের বিষয়ে যে অভিযোগ আনা হয়েছে সেটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। কারণ শিশুটি সম্পর্কে ভাগ্নি হয়। তাছাড়া ওর বয়স মাত্র সাড়ে তিন বছর। সুজনকে পূর্ব শত্রুতার জেরে মিথ্যা অভিযোগ তুলে তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। সে অপরাধী হলে আইনের মাধ্যমে শাস্তি দিত। বিনা বিচারে মেরে ফেলল কেন? এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করেন সুজনের স্বজনরা।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী কোতয়ালী থানার এসআই মানিক সাহা বলেন, মরদেহ শেবাচিম হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ময়না তদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

এ ব্যাপারে কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ভুক্তভোগী শিশুর মায়ের করা অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করার প্রক্রিয়া চলছে। অন্যদিকে গণপিটুনিতে নিহতের ঘটনায় আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।