পটুয়াখালীর মহিপুরে জেলের জালে ধরা পড়েছে বিরল ও বিষাক্ত এক সামুদ্রিক মাছ ‘লায়নফিশ’। রঙিন ডোরা দাগ ও লম্বা কাঁটাযুক্ত পাখনাবিশিষ্ট এই মাছটি দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, তেমনি অত্যন্ত বিষধর। মাছটি দেখে স্থানীয় জেলেদের মধ্যে দেখা দিয়েছে ব্যাপক কৌতূহল।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, এই মাছটি বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন নামে ডাকে বেশি নামে পরিচিত বাঘা বা রাওয়া ফিস নামে পরিচিতঅ
সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে মহিপুর মৎস্য বন্দরের মুন্নী ফিশ আড়তে মাছটি আনা হলে বন্দরজুড়ে হইচই পড়ে যায়। স্থানীয়রা ভিড় জমিয়ে মাছটি দেখতে আসে এবং অনেকেই ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেন।
স্থানীয় জেলে মন্নান মাঝি জানান, গত পরশু কুয়াকাটা উপকূলের গভীর সাগরে জাল ফেললে অন্যান্য মাছের সঙ্গে এই অদ্ভুত মাছটিও ধরা পড়ে। দেখতে অনেক সুন্দর হলেও শুনেছি এটি বিষাক্ত।
আরেক জেলে রহিম মিয়া বলেন, প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম এটি সাধারণ কোনো মাছ, কিন্তু পরে দেখি রঙটা অদ্ভুত আর পাখনাগুলো কাঁটার মতো। তখনই বুঝি এটি বিশেষ প্রজাতির কিছু।
লায়নফিশের দেহে লাল, সাদা ও বাদামি রঙের ডোরা দাগ এবং পাখনায় লম্বা কাঁটা থাকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই মাছ সাধারণত ভারত মহাসাগর, বঙ্গোপসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগরের উষ্ণ উপকূলীয় পানিতে পাওয়া যায়।
মুন্নী ফির্সের ম্যানেজার হিরণ জানান, মাছটি হঠাৎ মৎস্য বন্দরে আসলে মানুষে উপস্থিতি বেরেছে, অনেকে ছবি ভিডিও করেছে, এবং এই মাছটি বিষাক্ত হওয়ায় কোন বিক্রি হয় নাই, পরে এক পথচারীর ভালো লাগলে তিনি নিয়ে যায়।
ওয়ার্ল্ডফিশ-বাংলাদেশের গবেষণা সহকারী মো. বখতিয়ার রহমান বলেন, লায়নফিশ দেখতে অত্যন্ত আকর্ষণীয় হলেও এটি মারাত্মক বিষধর। এর পাখনার কাঁটায় থাকা বিষ মানুষকে দংশন করলে তীব্র ব্যথা, ফোলা ও কখনও শ্বাসকষ্ট হতে পারে। তাই খালি হাতে এই মাছ ধরা ঝুঁকিপূর্ণ।”
লায়নফিশ মূলত ছোট মাছ ও চিংড়ি খেয়ে বেঁচে থাকে এবং সাধারণত প্রবাল প্রাচীরের আশপাশে বিচরণ করে।
এ বিষয়ে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, লায়নফিশের পাখনায় বিষাক্ত কাঁটা থাকে। কেউ খালি হাতে এটি ধরলে বিপদ হতে পারে। তাই জেলেদের আমরা সতর্ক করেছি।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, মাছটি দেখতে সুন্দর হলেও এটি স্পর্শ না করা বা হাতে ধরে ছবি তোলার চেষ্টা না করাই নিরাপদ।