অবশেষে জেলার রাজনৈতিক অঙ্গনে চলমান সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেলেন দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সাবেক দুইবারের সংসদ সদস্য আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজুল্লাহ ফরিদ।
বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) বিকেলে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই আসনসহ আরও ৩৬টি আসনের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন। এর মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে পর্যবেক্ষণে রাখা কক্সবাজার-২ আসনের মনোনয়ন প্রশ্নে শেষ হলো অনিশ্চয়তা।
বঙ্গোপসাগরের বুকে দাঁড়িয়ে থাকা দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী ও কুতুবদিয়া নিয়ে গঠিত কক্সবাজার–২ আসন দীর্ঘদিন ধরেই বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘাঁটি। এই আসনে আলমগীর ফরিদ প্রথমবার ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী সিরাজুল মোস্তফাকে ১২ হাজার ২ ভোটে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার প্রাপ্ত ভোট ছিল ৪৪,৪৪৫।
পরবর্তীতে ২০০১ সালের নির্বাচনে তিনি আরও বৃহৎ ব্যবধানে বিজয় অর্জন করেন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীকে বিপুল ৫৪,৩১৩ ভোটে পরাজিত করে দ্বিতীয়বারের মতো সাংসদ হন। সেসময় তার ভোট সংখ্যা দাঁড়ায় ১ লাখ ৩ হাজার ৫০৩। দলে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন ও সাংগঠনিক দৃঢ়তা বিবেচনায় এবারও তাঁকেই নির্বাচনের মাঠে ভরসা হিসেবে এগিয়ে দিয়েছে বিএনপি।
এদিকে একই আসনে নিজেদের প্রার্থী ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদকে মনোনয়ন দিয়েছে দলটি। ফলে মহেশখালী-কুতুবদিয়ায় এবার লড়াই হবে বিএনপির অভিজ্ঞ প্রার্থী বনাম জামায়াতের প্রতিষ্ঠিত নেতৃত্বের মধ্যে।
মনোনয়ন ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই মহেশখালী-কুতুবদিয়ায় নির্বাচনি মাঠে নতুন উত্তাপ তৈরি হয়েছে। দুই দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা ইতোমধ্যে নির্বাচনী প্রস্তুতি ও মাঠপর্যায়ের যোগাযোগ জোরদার করতে শুরু করেছেন।
জেলা রাজনীতিতে ধারণা করা হচ্ছে, দ্বীপ অঞ্চলের স্থানীয় সমস্যা, দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবিলা, অবকাঠামো উন্নয়ন ও কেন্দ্রীয় রাজনীতির প্রভাব-সবকিছু মিলিয়ে এবার কক্সবাজার-২ আসনে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন দেখা যাবে।