কক্সবাজারে আয়োজিত ডিসি (জেলা প্রশাসক) গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট এর ফাইনাল ম্যাচ দর্শকদের তাণ্ডবে পণ্ড হয়ে গেছে। এ সময় ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ স্টেডিয়ামের ভাঙচুরের ঘটনায় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিনসহ অন্তত ৩৫ জন আহত হয়েছেন।
দর্শকদের অভিযোগ, ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত ৬ গুণ টিকেট বিক্রি করা হয়েছে। আর টিকেট বিক্রি হয়েছে অতিরিক্ত মূল্যে। এসব দর্শকদের বসার স্থান না থাকায় বিশৃঙ্খলার সূত্রপাত ঘটে।
কক্সবাজার বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলার ছিল শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর)। রামু ও টেকনাফ উপজেলা একাদশের মধ্যে বেলা ৩টায় ফাইনাল ম্যাচটি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ৭টা থেকে স্টেডিয়ামে গিয়ে টিকেট সংগ্রহ শুরু করেছে দর্শকরা।
এ টিকেটের মূল্য ৫০ টাকা নির্ধারিত থাকলেও দর্শকের উপস্থিত দেখে ক্রমাগত বাড়তে থাকে। দুপুরে ২টা পর্যন্ত আয়োজক কমিটির অতিরিক্ত মূল্যে ধারণ ক্ষমতার ৬ গুণ টিকেট বিক্রি করে।
দর্শকরা জানিয়েছেন, ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে এক একটি টিকেট। স্টেডিয়ামটির ধারণ ক্ষমতা ৫ হাজার হলেও ৩০ হাজার টিকেট বিক্রি করে দেয়। এতে অতিরিক্ত দর্শক গ্যালারিতে বসার স্থান না পেয়ে গেট ভেঙে আড়াইটার দিকে দর্শক পুরো মাঠ দখল করে নেন।
এ কারণে মাঠে খেলা পরিচালনার সুযোগ না হওয়ায় আয়োজকসহ পুলিশ, র্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। কিন্তু দফায় দফায় চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি।
এর মধ্যে স্টেডিয়ামে প্রবেশে ব্যর্থ দর্শকরা স্টেডিয়ামের বাইর থেকে ভবনে ভাঙচুর শুরু করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এর মধ্যে বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটের দেখা মাঠে থাকা দর্শকদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাঠিচার্জ করে বের করে দিতে সক্ষম হয়।
এরপর মাঠে খেলা পরিচালনার প্রস্তুতি নিলেও গ্যালোরিতে দর্শক ও বাইরের দর্শকরা একযোগে হামলা করে গ্যালোরি, মাঠ, প্রেস বক্সসহ সব কিছু ভাঙচুর ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এতে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিনসহ অন্তত ৩০/৩৫ জন আহত হয়েছে।
যার মধ্যে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ১৫ জনকে চিকিৎসার তথ্য নিশ্চিত করেছেন জরুরি বিভাগে দায়িত্বশীল চিকিৎসক।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ফাইনাল খেলা স্থগিত করলেও আয়োজক কমিটি, জেলা প্রশাসকসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টা) স্টেডিয়ামের একাংশে আগুন জ্বালিয়ে দিতে দেখা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। তবে সর্বশেষ কি পরিস্থিতি তৈরি হয় তার জন্য আরো কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ইলিয়াস খান বলেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ, সেনাবাহিনী, ও র্যাব কাজ করছে।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার এক কর্মকর্তা বলেন, দর্শকদের চাপ কমাতে টিকেটের মূল্য বাড়ানো হয়েছিল। তাতে ও শেষ রক্ষা হয়নি। শেষ পর্যন্ত ফাইনাল খেলা পণ্ডের পাশাপাশি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে।