পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রদূত (অব.) সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, সরকার সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের প্রতি সমান শ্রদ্ধাশীল এবং ধর্মীয় উৎসবগুলো নির্বিঘ্নে পালনের জন্য সব সময় সহযোগিতা করে যাচ্ছে।
শনিবার (১১ অক্টোবর) বিকালে রাঙামাটি শহরের মোনঘর রাঙ্গাপানি মিলন বৌদ্ধ বিহার প্রাঙ্গণে আয়োজিত কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এই উৎসব শুধু ধর্মীয় নয়, এটি পাহাড় ও সমতলের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধনকে আরও দৃঢ় করবে। এটি শান্তি, সম্প্রীতি ও গণতন্ত্রের বার্তা বয়ে আনবে।
উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা আরও বলেন, জাতীয় কঠিন চীবর দান উৎসবের মাধ্যমে পাহাড়ে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের বার্তা আরও জোরালো হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা জরুরি। এটিকে কোনোভাবে ফাটল ধরানো যাবে না।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা আসন্ন জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন গণতন্ত্রের অন্যতম ভিত্তি। শান্তিপূর্ণ ও সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করতে আপনাদের দায়িত্বশীল সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি সবাইকে বিভ্রান্তিকর তথ্য ও বিশৃঙ্খলা থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান এবং বলেন, সরকারের উদ্দেশ্য একটি অংশগ্রহণমূলক, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করা, যাতে জনগণ নির্বিঘ্নে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন।
অনুষ্ঠানে উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ.ফ.ম. খালিদ হোসেন।
ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. খালিদ হোসেন জানান, বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের জন্য ঢাকার উত্তরায় একটি শশ্মান নির্মাণ করা হয়েছে এবং পূর্বাচলে আন্তর্জাতিক মানের বৌদ্ধ বিহার ও কল্যাণ ট্রাস্ট ভবন কমপ্লেক্স নির্মাণের জন্য ২১ কাঠা জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। সরকার বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় কর্মকাণ্ডে সহায়তার অংশ হিসেবে ২ কোটি টাকা অনুদান প্রদান করেছে।
শুরুতে পঞ্চশীল প্রার্থনা, আকাশ প্রদীপসহ বিভিন্ন দান দানোৎস্বর্গ, সন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, সন্ধ্যায় ফানুস উত্তোলন এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় করণীয় মৈত্রী সূত্র পাঠ অনুষ্ঠিত হয়। দিনব্যাপী ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বৌদ্ধ ভিক্ষুরা ধর্মীয় দেশনা প্রদান করেন।
এছাড়াও উৎসবে সারা দেশ থেকে তিন শতাধিক বৌদ্ধ ভিক্ষু অংশগ্রহণ করেন। কক্সবাজার, টেকনাফ, রংপুর, দিনাজপুর, ঢাকা, কুমিল্লা, বরগুনা, পটুয়াখালী, চট্টগ্রামসহ সমতলের বিভিন্ন ভিক্ষুসংঘ এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের ১৬টি ভিক্ষুসংঘকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
এ সময় উপদেষ্টার সহধর্মিণী নন্দিতা চাকমা, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি প্রফেসর ড. সুকোমল বড়ুয়া, ভাইস চেয়ারম্যান ভবেশ চাকমা, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট দীপেন দেওয়ান, জাতীয় কঠিন চীবর দান উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক রনজ্যোতি চাকমা, সংগীত শিল্পী রনজিত দেওয়ানসহ বিভিন্ন ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।