সন্দেহজনক লেনদেন ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার (শ্যোন-অ্যারেস্ট) দেখানো হয়েছে।
বুধবার (২২ অক্টোবর) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ হাসানুল ইসলামের আদালতে শুনানি শেষে এই আদেশ দেওয়া হয়। এ সময় আসামি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী কারাগার থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর দুদকের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম মহানগর স্পেশাল জজ (ভারপ্রাপ্ত) মো. আবদুর রহমানের আদালতে ১০৮ কোটি ৬৪ লাখ ৮৫ হাজার ৭৯০ টাকা সন্দেহজনক লেনদেন ও ৫ কোটি ৯৪ লাখ ৯২ হাজার ৭৭২ টাকার অবৈধ সম্পদের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়েছিল। এর আগে গত ১৩ জুলাই দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করেছিলেন প্রধান কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. নিজাম উদ্দিন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মুহম্মদ কবির হোসাইন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে ১২টি ব্যাংক হিসাবে ১০৮ কোটি ৬৪ লাখ ৮৫ হাজার ৭৯০ টাকা সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়।
এর মধ্যে ৫৪ কোটি ৩৯ লাখ ১৩ হাজার ৭২ টাকা জমা ও ৫৪ কোটি ২৫ লাখ ৭২ হাজার ৭১৮ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।
দুর্নীতি ও ঘুষের মাধ্যমে অর্জিত সম্পদের অবৈধ উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশ্যে ১২টি ব্যাংক হিসাবে এ অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে। এর মাধ্যমে এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর অনিয়ম-দুর্নীতির অনুসন্ধানে তার ২৪ কোটি ৮ লাখ ৩০ হাজার ২৩২ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়।
আয়কর নথি পর্যালোচনায় দুদক ফজলে করিমের ১৮ কোটি ১৩ লাখ ৩৭ হাজার ৪৬০ টাকার বৈধ ও গ্রহণযোগ্য আয় পেয়েছে। আয়কর দেওয়া বৈধ সম্পদের চেয়ে তার অর্জিত সম্পদ ৫ কোটি ৯৪ লাখ ৯২ হাজার ৭৭২ টাকার বেশি পেয়েছে দুদক, যা তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে অর্জন এবং ভোগদখল করেন।
ফজলে করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে ২০০৪ সালের দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২৭(১) এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪(২) ও ৪(৩) এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর অবৈধভাবে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ার গাজীরবাজার থেকে এবিএম ফজলে করিমকে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। পরে ১৯ সেপ্টেম্বর বিকেলে তাকে একটি হেলিকপ্টারে করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কারাগার থেকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়।