ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতর আহত বিএনপি নেতা মফিজুর রহমান মুকুলকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তার অবস্থা এখনো আশঙ্কামুক্ত নয় বলে জানা গেছে।
শুক্রবার রাতে মুকুলের সঙ্গে থাকা জেলা বিএনপির সদস্য হযরত আলী বলেন, ‘মুকুল ভাইয়ের অবস্থা ভালো নয়। এভারকেয়ার হাসপাতালে তার সিটি স্ক্যান করার পর ডাক্তার জানিয়েছেন, তার দেহের তিনটি গুলি মূত্র থলি, কিডনি ও লাঞ্চে এফেক্ট করেছে। সবাই মুকুল ভাইয়ের জন্য দোয়া করুন।’
এদিকে বিএনপি নেতা মুকুল গুলিবিদ্ধের ঘটনার সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক তাদেরকে দ্রুত ধরা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার (এসপি) এহতেশামুল হক।
তিনি (এসপি) জানান, ইতিমধ্যে ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশের একাধিক গোয়েন্দা টিম কাজ শুরু করেছে। হামলাকারীরা কোনোভাবেই রেহাই পাবে না। অপরাধীরা ধরা পড়বেই।’
জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে বাসার সামনে সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন নবীনগর উপজেলা যুবদলের সাবেক আহবায়ক ও বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান মুকুল।
তার পারিবারিক সূত্র জানায়, উপজেলা সদরের আদালত সংলগ্ন পদ্মপাড়ায় তিনি আকস্মিভাবে এই সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন। ঘটনার পরপরই তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে স্থানীয় হাসপাতাল এবং পরে ঢাকায় পাঠানো হয়।
এ ঘটনার পর স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ সর্বত্র থমথমে পরিস্থিতি ও অজানা এক আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ঘটনার পরপরই বিএনপি নেতা মুকুলের বিক্ষুব্ধ অনুসারীরা উপজেলা সদরে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
গুলিবিদ্ধ মুকুলের ছোট ভাই নবীনগর বাজারের ফটোগ্রাফার ও নাট্যকর্মী মুজিবুর রহমান শামীম ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জানান, তার বড় ভাই বিএনপি নেতা মফিজুর রহমান মুকুল সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে নবীনগর বাজার থেকে রিকশাযোগে আদালত পাড়া সংলগ্ন পদ্নপাড়ায় অবস্থিত তার নিজের বাড়িতে ফিরছিলেন। ওইসময় বাড়ির সামনে এসে রিকশা থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গেই পূর্ব থেকে ওঁৎ পেতে থাকা অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা তাকে লক্ষ্য করে পেছন থেকে পরপর কয়েক রাউন্ড গুলি চালায়। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
পরে লোকজন তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে পরিস্থিতির অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান চিকিৎসক ডা. হাবিবুর রহমান হাবিব জানান, ‘গুলিবিদ্ধ মুকুলের পিঠে দুটি ও পাছায় ১টি গুলি লেগেছে। তার অবস্থা ভালো নয়। তাই তাকে দ্রুত আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় রেফার করি।’
নবীনগর থানার ওসি শাহীনূর ইসলাম শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বলেন, ‘ঘটনার খবর শুনেই পুলিশের সার্কেল স্যার (এডিশনাল এসপি)সহ আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসি। ঘটনাস্থল থেকে ইতিমধ্যে তিনটি গুলির খোসাও উদ্ধার করা হয়েছে।’