লক্ষ্মীপুরে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে বিদ্যালয় কার্যক্রম 

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের (৩নং ওয়ার্ড) মধ্য চরভূতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এ অবস্থাতেই বাধ্য হয়ে শিক্ষকরা চালিয়ে যাচ্ছেন কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের পাঠদান। এভাবে বছরের পর বছর একটি জরাজীর্ণ স্কুল চলছে।

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কারণে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানকে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়ে গেছেন। ফলে দিনদিন শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে এই বিদ্যালয় থেকে।

বিদ্যালয়টির ভবনের চতুর্দিকে কোথাও খসে পড়ছে পলেস্তারা, কোথাও আবার মাথার ওপর থেকে ঝরে পড়ছে ইট-শুরকি। ভবনের বিভিন্নস্থানে ফাটল ধরে বেরিয়ে পড়েছে রড। বর্ষাকালে ছাদ বেয়ে পড়ে পানি। বিদ্যালয়ের পেছনের অংশ হঠাৎ তাকালে মনে হবে ভূতের বাড়ি। 

বর্তমানে ১৪২ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে ৬ জন শিক্ষক ঝুঁকিপূর্ণ স্কুলে চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষা কার্যক্রম।

বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা জানান, আমাদের স্কুলটি ভাঙাচোরা। বৃষ্টি আসলে পানি পড়ে। মাঝেমধ্যে পলেস্তারা খসে পড়ে। আমরা ঝুঁকির মুখে পড়ালেখা করি। আমাদের অনেক ভয় হয় এ স্কুলে। আমাদের অনেক সহপাঠী অন্য স্কুলে চলে গেছে। বৃষ্টির সময় স্কুল আসতে কষ্ট হয়। আমরা একটি সুন্দর স্কুল চাই।

বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী সাকিব মাহমুদ জানান, তিনি ওই স্কুল থেকে ২০১৫ সালে পিএসসি পরীক্ষা দিয়েছেন। তখন থেকেই বিদ্যালয়টি ঝুঁকিপূর্ণ। বর্তমানে এতোটাই জরাজীর্ণ যে ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাস করতে আগ্রহী নয়। দেখা যায়, অভিভাবকরা তাদের স্কুল ভর্তি করে। কিন্তু তারা দুর্ঘটনার ভয়ে বিদ্যালয়ে আসে না। আমাদের এ গ্রামে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় কোন কেন্দ্র নাই। আমাদের বিদ্যালয়টি সাইক্লোন সেন্টার হিসেবে নতুন ভবন করার দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি চলাচলের মাটির রাস্তাটি পাকা অথবা সলিং করা হোক।

বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মর্জিনা বেগম জানান, আমার দেখা এমন ঝুঁকিপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ জেলায় একটিও নেই। সরকারি চাকরি করি এজন্য পরিস্থিতির কারণে বাধ্য হয়ে আসতে হচ্ছে। 

প্রধান শিক্ষক মো. জহির উদ্দিন বলেন, বিদ্যালয়টি ছিল রেজিস্ট্রার প্রাথমিক বিদ্যালয়। এরপর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়ের ভবন একেবারে ঝুঁকিপূর্ণ। এতে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানকে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়ে গেছেন। দিনদিন শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। 

লক্ষ্মীপুর জেলা প্রাথমিক প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ সাজ্জাদ জানান, ইতোমধ্যেই আমাদের উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করা হয়েছে। আমরা প্রকৌশলী কাছে লিখিত আবেদন দেব। তারা কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে পর্যালোচনা করবে। তারা আমাদের তদন্ত রিপোর্ট দিলে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের চিঠি দেব, যেন ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের বিষয়ে তারা কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়।