নারায়ণগঞ্জের বন্দরে পারিবারিক কলহের জেরে দী আক্তার ওরফে নীলা (২৫) নামে এক গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যার পর অভিযুক্ত ভাসুর রবিউল হাসান থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন।
রোববার (৩ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার কুশিয়ারা এলাকার একটি নির্জনস্থান থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত গৃহবধূ ওই এলাকার প্রবাসী রাসেল মিয়ার স্ত্রী ও মুন্সিগঞ্জ জেলার ইদ্রিসপুর গ্রামের শাহজাহান দেওয়ানের মেয়ে।
অভিযুক্তের বরাত দিয়ে বন্দর থানার উপ-পরিদর্শক কামরুজ্জামান জানান, নিহত গৃহবধূ নদীর পূর্বে আরো ৩টি বিয়ে হয়ে ছিল। কুশিয়ারা এলাকার প্রবাসী রাসেল তার ৪র্থ স্বামী। পরিবারের সবার সাথে প্রায়ই নদীর ঝগড়া হতো। এ নিয়ে রাসেলের সাথে একবার ডিভোর্স হয়।
পরে ছোট ভাই রাসেল বড় ভাই রবিউলের জমানো ও ঋণের টাকা নিয়ে পালিয়ে প্রবাসে গিয়ে আবারো নদীর সাথে সম্পর্ক হয়। রাসেল ঋণ পরিশোধ না করে নদীর প্রবাসে যাওয়ার জন্য বড় ভাইয়ের কাছে থেকে আরো টাকা দাবি করে। এ নিয়ে ঝগড়ার পর নদীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন ভাসুর। হত্যাকাণ্ডের ঘটনার ২ ঘন্টা পর আজ সকাল ৯টার দিকে ঘাতক ভাসুর রবিউল হাসান আবির হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত রক্তমাখা চাকু নিয়ে স্বেচ্ছায় বন্দর থানায় এসে আত্মসমর্পণ করেন।
পরে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
এর আগে, রোববার সকাল ৭টায় বন্দর উপজেলার কুশিয়ারা এলাকার নির্জন একটি বিল ওই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।
ঘাতক ভাসুর রবিউল হাসান আবির বন্দর থানার কুশিয়ারা এলাকার মৃত আবুল হোসেন মিয়ার ছেলে।
এলাকাবাসী ও বিভিন্ন তথ্য সূত্রে জানা গেছে, নিহত গৃহবধূ নদী আক্তারের পূর্বে ৩টি বিয়ে হয়ে ছিল। কুশিয়ারা এলাকার প্রবাসী রাসেল ছিল তার ৪ নাম্বার স্বামী।
এদিকে ঘাতক রবিউল হাসান ওরফে আবিরের মা বেশ কিছু দিন পূর্বে ব্যবসার জন্য ব্রাক ব্যাংক থেকে ৪ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে তার ছোট ছেলে রাসেল ও তার স্ত্রী নদী আক্তারের হাতে তুলে দেন। কিন্তু রাসেল ঋণ পরিশোধ না করে প্রবাসে পাড়ি জমায়। এ ঘটনায় ব্রাক ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জিম্মাদার ভাসুর রবিউল হাসান আবিরকে টাকা পরিশোধের জন্য চাপ দেয়। এ নিয়ে ছোট ভাইয়ের স্ত্রী নদী আক্তারের সাথে ভাসুর রবিউল হাসান আবির সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনার জেরে আজ সকাল ৭টায় ভাসুর রবিউল হাসান আবির তার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী নদী আক্তারকে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে কুশিয়ারা এলাকার একটি নির্জন বিলে নিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনার ২ ঘন্টা পর সকাল ৯টায় ভাসুর রবিউল হত্যকাণ্ডে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্র নিয়ে বন্দর থানায় এসে আত্মসমর্পণ করে।
এ ব্যাপারে বন্দর থানার ওসি লিয়াকত আলী জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।