সিএনজি চালক থেকে কোটিপতি হওয়া সেই মোতালিব গ্রেপ্তার 

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দলীয় ধাপটে সিএনজি চালক থেকে কোটিপতি বনে যাওয়া স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মোতালিবকে একাধিক অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১। 

শুক্রবার (৮ আগস্ট) দিবাগত রাতে রাজধানী বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার মোতালেব দাউদপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নাগদা গ্রামের মৃত ইসলাম উদ্দিনের ছেলে। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, গত দেড় দশকে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় দাউদপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হিসেবে এমন কোন অপকর্ম নেই, যা তিনি করেননি। দলীয় দাপটে মোতালিব জড়িয়ে পড়েন মাদক ব্যবসা, জমি দখল, নারী কেলেঙ্কারি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে।

ব্যবসায়ী সহযোগী নেওয়াজের সঙ্গে মিলে তিনি জোরপূর্বক প্রায় ২০ বিঘা কৃষিজমিতে বালু ভরাট করে শতাধিক ভুয়া দলিল তৈরি করেন। এসবের প্রতিবাদ করলেই হামলা-মামলা, অবৈধ অস্ত্রের শোডাউন ও কিশোর গ্যাং ব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এলাকার বাসিন্দারা আরো জানান, প্রায় এক দশক আগে বীর হাটাবো গ্রামের এক প্রভাবশালী পরিবারের গৃহবধূর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন মোতালিব। প্রথম স্ত্রী থাকার বিষয়টি গোপন রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। দ্বিতীয় স্ত্রী অভিযোগ করেছেন, তার নারী কেলেঙ্কারি ও অসামাজিক কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে প্রায় ২ বছর ধরে আলাদা থাকছেন।

সম্প্রতি যমুনা ব্যাংকের এক নারী কর্মচারীর সঙ্গে কক্সবাজার ভ্রমণের ভিডিও সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হলে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। এছাড়া ছাত্র আন্দোলন দমাতে কাঞ্চন সেতুর কাছে লাঠিচার্জ ও গুলি চালানোর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

রূপগঞ্জ থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ আছে, ২০২১ সালের ২ অক্টোবর মোতালিবসহ ১৫০-২০০ জন অস্ত্র, ককটেল ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে একটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে এবং স্বর্ণ, মোবাইল, ল্যাপটপসহ মূল্যবান সামগ্রী লুট করে। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণ ও ফাঁকা গুলি চালিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়।

রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম বলেন, দাউদপুরের ৬নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোতালিবকে র‌্যাব-১ গ্রেপ্তার করেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদনসহ বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আরও মামলা আছে কি না, তা যাচাই করা হচ্ছে।

পুলিশ জানিয়েছে, রিমান্ডে নিলে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, বিস্ফোরকের উৎস শনাক্ত, পলাতক আসামিদের অবস্থান নির্ণয় এবং ঘটনার মূল রহস্য উদ্ঘাটন সম্ভব হবে।