সংস্কারের অভাবে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধিকাংশ ঘর বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বেহাল ও জরাজীর্ণ এসব ঘরে বসবাস করতে গিয়ে দরিদ্র শ্রেণির বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
অভিযোগ উঠেছে, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের পর থেকে আর কোনো সংস্কার করা হয়নি। ফলে টিনশেড ঘরগুলোর দেয়াল ও ছাদের টিন, দরজা-জানালা ক্ষয়ে ভেঙে গেছে। সামান্য বৃষ্টিতেই ফুটো চাল দিয়ে পানি পড়ায় ১৫টি ভূমিহীন পরিবার চরম ভোগান্তিতে পড়েছে।
কাপাসিয়া উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নে ২০০৪ সালে আশ্রয়ণ প্রকল্পের টিনশেট ৫০টি ঘর নির্মাণ করা হয়। পুরাতন টিনশেড ঘরগুলো বেড়া ও ছাউনি টিন দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল। সেক্ষেত্রে কিছু ঘর নষ্ট হয়ে গেছে, কিছু কিছু ঘর নিজ দায়িত্বে ঘর মালিকদের সংস্কার করতে দেখা গেছে। অধিকাংশ ঘরে বৃষ্টির সময় আসবাবপত্র ভিজে যায়।
কেউ কেউ পলিথিন কাগজ দিয়ে বৃষ্টির পানি আটকানোর চেষ্টা করেন, আবার কেউ বর্ষায় প্রতিবেশীর ঘরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন।
আশ্রয়ণে বসবাসরত জহুরা খাতুন বলেন, ঘর পেয়েছি ঠিকই, কিন্তু সংস্কার না হওয়ায় থাকা সম্ভব নয়। চালের টিন নষ্ট, বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে, কাপড়সহ সবকিছু ভিজে যায়। অধিকাংশ বাসিন্দা ছেলে-মেয়ে পরিবার নিয়ে কষ্টে দিন পার করছি। প্রশাসন যদি সংস্কার করে দিত, তাহলে কিছুটা স্বস্তি মিলত।
আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, নষ্ট হয়ে যাওয়া ঘরগুলো মেরামতের জন্য কয়েকবার উপজেলা থেকে পরিদর্শন করা হলেও এখনো মেরামত হয়নি। জরাজীর্ণ ঘর মেরামতের বিষয়ে ইউএনওকে অবহিত করা হলেও এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমরা প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছি, কিন্তু সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।
রমিজ উদ্দিন বলেন, আশ্রয়ণে প্রায় ৫০টি ঘরই নষ্ট হয়ে ব্যবহারের অনুপযোগী। সরকারি বরাদ্দ না থাকায় উপকারভোগীরা নানা সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। কর্মসংস্থান না থাকায় প্রায় ৩৫টি পরিবার ঋণগ্রস্ত হয়ে অন্যত্র চলে গেছে। এছাড়া নিরাপদ পানি, পানি নিষ্কাশন, ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা এবং কমিউনিটি ক্লিনিকে ডাক্তার সংকট রয়েছে। এসব সমস্যা সমাধান হলে উপকারভোগীরা স্বাচ্ছন্দে বসবাস করতে পারবেন বলে জানান তিনি।
স্বেচ্ছাসেবক শরিফ উদ্দিন বলেন, আশ্রয়ণের সবগুলো ঘরের টিন নষ্ট হয়ে গেছে। সংস্কারের জন্য আমরা কয়েকবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেও কোন কাজ হয়নি। আমাদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে টিউবওয়েল ও কিছু সহযোগিতা করা হয়েছে।