নুরাল পাগলের দরবারে পুলিশের ওপর হামলা, গ্রেপ্তার বেড়ে ১১

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে নুরাল পাগলের দরবারে বিক্ষুব্ধ জনতা ভাঙচুরের সময় পুলিশের উপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আরও ৪ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ এখন পর্যন্ত মোট ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মো. শরীফ আল রাজীব।

গ্রেপ্তাররা হলেন- গোয়ালন্দের নতুন পাড়া (মাল্লাপট্টি) এলাকার মো. শওকত সরদারের ছেলে মো. জীবন সরদার (২২), মাল্লাপট্টী শাকের ফকির পাড়া এলাকার হেলাল উদ্দিনের ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম শুভ (১৭), ফরিদপুর জেলার কোতোয়ালি থানার ডিগ্রীরচর বারখাদা গ্রামের মো. নিজাম উদ্দিন সরদারের ছেলে মোহাম্মদ ফেরদৌস সরদার (৩৬) ও গোয়ালন্দ পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের আদর্শ গ্রামের ছালামের ছেলে বিল্লু।

এর আগে এই মামলার গোয়ালন্দ উপজেলার দেওয়ান পাড়া গ্রামের আফজাল সরদারের ছেলে মো. শাফিন সরদার (১৮), উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের ১নং দিরাস্তুল্লাহ মৃধা পাড়ার মৃত আক্কাস মৃধার ছেলে উজানচর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. মাসুদ মৃধা, উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের লাল মিয়া মৃধার ছেলে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক হিরু মৃধা, দেওয়ান পাড়া গ্রামের মো. জহির উদ্দিনের ছেলে এনামুল হক জনি (৩২) ও গোয়ালন্দ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাজীপাড়া গ্রামের কাজি আরিফের ছেলে কাজী অপু (২৫), গোয়ালন্দ উপজেলার দিরাজতূল্লাহ মৃধা ডাঙ্গী গ্রামের মৃত মকলেছুর রহমান মৃধার ছেলে মো. হায়াত আলী মৃধাকে (২৯) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মো. শরীফ আল রাজীব বলেন, পুলিশের ওপর হামল ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় অজ্ঞাত ৩৫০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে গতকাল রাতে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছ। 

এর আগে এই মামলার আরও ৭ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এ পর্যন্ত এই মামলায় মোট ১১ জন আসামি গ্রেপ্তার রয়েছে।

গতকাল ৬ জনকে আদালতে সোপর্দ করা হলে একজন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। পরে আদালত তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।বাকি আসামিদের আজ আদালতে তোলা হবে।

উল্লেখ্য, শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর)রাতে পুলিশের সরকারি কাজে বাঁধা, পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় গোয়ালন্দ ঘাট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সেলিম মোল্লা বাদি হয়ে ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।

জুমার নামাজের পর রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে নুরাল পাগলের দরবারে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালায় বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় নুরাল পাগলের ভক্তদের সঙ্গে সংঘর্ষে একজন নিহত এবং ২ পক্ষের শতাধিক মানুষ আহত হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে পুলিশের ওপর হামলা চালানো হয় ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এতে ১০-১২ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। পরে নুরাল পাগলের মরদেহ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দেয় হামলাকারীরা।