আজ রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর), সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস। ভোর থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। এদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অফিস করার কথা কর্মকর্তাদের। কিন্তু অফিসগুলোতে ঝুঁলছে তালা।
আবার কয়েকটি অফিসের গিয়ে দেখা যায়, অফিস খুললেও অফিসার নেই। তাদের কক্ষে মাথার ওপর ঘুরছে বৈদ্যুতিক পাখা।
সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে অফিসগুলোতে তালা ঝোলানো দেখতে পায় সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ। সাটুরিয়া উপজেলার উত্তর পাশে একটি দোতলা বিল্ডিংয়ের নিচতলায় রয়েছে তথ্যকেন্দ্র অফিস, বস্ত্র ও পাট অধিদপ্তর কর্মকতার কার্যালয় ও পরিসংখ্যান কর্মকর্তার কার্যালয়।
রোববার সকাল ৯ থেকে ১২টা ৬ মিনিট পর্যন্ত অফিসে তালা ঝুলছিল। সকালে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির জন্য কেউ অফিসে আসেনি বলে জানান। তবে সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ মনে করেন, তদারকি না থাকায় সরকারি কর্মকর্তারা অফিস ফাঁকি দিচ্ছেন।
সরকারি বিধি অনুযায়ী, সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত সব কর্মকর্তাকে কমপক্ষে ১ ঘণ্টা অফিস কক্ষে উপস্থিত থাকতে হবে। এরপর তারা বাহিরে যেতে পারবেন অফিসিয়াল কাজে।
কোন অফিসার সরকারি কাজে ব্যস্ত থাকলে ওই অফিসের সহকারি কর্মকর্তা বা অফিস সহায়ক অফিস খুলে দাপ্তরিক কাজকর্ম করবেন এমন নীতিমালা রয়েছে। সাটুরিয়া উপজেলার কর্মকর্তারা সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অফিস ফাঁকি দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলার তথ্যকেন্দ্রের তথ্য কর্মকর্তা মনিরা জাহান (তথ্য আপা নামে পরিচিত) বলেন, তার অফিসে ২ জন সহকারি কর্মকর্তা ও একজন অফিস সহায়ক আছে। তারা হলেন- সহকারি স্বপ্তি রায় ও রিপিলা আক্তার এবং অফিস সহায়ক মো. জুলহাস উদ্দিন।
তারা সবাই প্রকল্পের আওতায় চাকুরি করেন। তাদেরকে আমি ফোনে বলেছি, আমি আজ অফিসে আসতে পারব না। তোমরা অফিস কর। কিন্তু কর্মকর্তার নির্দেশ অমান্য করে কেউ অফিসে আসেনি।
সাটুরিয়া উপজেলা বস্ত্র ও পাট কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান জানান, অফিসে আমি ছাড়া কোন জনবল নেই। একজন কম্পিউটার অপারেটর আছে সে প্রকল্পের আওতায়। আমি জেলা অফিসে আসার কারণে অফিসে তালা ঝুলছে।
সাটুরিয়া উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মো. ছাদিকুর রহমান বলেন, আমার অফিসে লোকবল সংকট। আমি আর একজন তদন্তকারী কর্মকর্তা আছে। আমরা দুজনেই জেলায় ট্রেনিংয়ে আছি। অফিস সহায়ক না থাকায় অফিসে তালা ঝুলছে। তবে এই কর্মকর্তা জেলায় কোন মিটিং বা টেট্রেনিংয়ে যায়নি বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) জেলা কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে কথা হয় মানিকগঞ্জ জেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মো. মিনার উদ্দীন সঙ্গে। তিনি বলেন, উপজেলা কর্মকর্তাদের নিয়ে জেলায় কোন ধরণের মিটিং বা ট্রেনিংয়ে নেই। যদি কেউ জেলার মিটিং বা ট্রেনিংয়ের কথা বলে থাকে, তিনি কর্মকর্তা মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন বলে তিনি জানান।
এদিকে সাটুরিয়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী, বন বিভাগ ও রিসোট সেন্টার গিয়ে দেখা যায়, অফিস খোলা আছে কর্মকর্তা নেই। মাথার উপর ফ্যান ঘুরছে। অফিস সহায়কদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, স্যার এখনো আসেনি। তখন ঘড়ির কাটায় ১২টা ২০ মিনিটি।
সাটুরিয়ার ইউএনও মো. ইকবাল হোসেন বলেন, ঝড় বৃষ্টি যতই হোক অফিস খোলা রাখতে হবে। যেসব অফিসগুলোতে তালা ঝুলছে ওইসব অফিসগুলো আমার অফিসের পাশে। মাত্র ৫০ গজ উত্তরে। বৃষ্টির অজুহাত দিয়ে অফিসে না আসায় তাদের বিরুদ্ধে সরকারি চাকুরীবীধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, সরকারি অফিস আদেশ অনুযায়ী প্রতিটি অফিসের প্রধান কর্মকর্তা সকাল ৯-১০টা পর্যন্ত অফিসে হাজিরা দিয়ে অফিসিয়াল কাজে তদারকি করার জন্য বাহিরে যেতে পারেন।