নদী বাঁচলে পরিবেশও টিকে থাকবে: রিজওয়ানা হাসান

নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর অঞ্চলে শিল্পবর্জ্যের কারণে ভয়াবহভাবে দূষিত হচ্ছে শীতলক্ষ্যা নদী। এই দূষণ শুধু নদীর প্রাণহানিই ঘটাচ্ছে না, বরং আশপাশের পরিবেশের ভারসাম্যকেও মারাত্মকভাবে বিপন্ন করছে।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকাল থেকে শুরু হওয়া নারায়ণগঞ্জ থেকে গাজীপুরের নদী ও পরিবেশকর্মীদের অনুপ্রেরণামূলক মিলনমেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান।

তিনি বলেন, নদীর দূষণ রোধ করা গেলে জলজ প্রাণীরা মুক্তভাবে বাঁচতে পারবে, আর নদীও ফিরে পাবে তার স্বাভাবিক প্রবাহ। নদী বাঁচলে পরিবেশও টিকে থাকবে।

রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, শুধু সরকারের উদ্যোগ যথেষ্ট নয়—নদী রক্ষায় স্থানীয় জনগণের সহযোগিতা ও পরিবেশ কর্মীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। সম্মিলিত উদ্যোগেই সম্ভব শীতলক্ষ্যা নদীকে দূষণমুক্ত করে তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা।

এদিন ভোরের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গেই নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কাঞ্চন ঘাট থেকে শুরু হয় দিনব্যাপী এই নদীযাত্রা। স্রোত, নদী বাঁচানোর প্রত্যয় ও সচেতনতায় অনুপ্রাণিত হয়ে নদীপথে যাত্রা করেন শতাধিক পরিবেশকর্মী।

যাত্রাপথে চলে নদীর গল্প, আড্ডা, গান, ছবি আঁকা ও নদী নিয়ে মুক্তচিন্তা। অংশগ্রহণকারীদের কণ্ঠে বারবার উচ্চারিত হয় একটাই আহ্বান—“নদী বাঁচাও, জীবন বাঁচাও।”

দিনব্যাপী এই আয়োজনের চূড়ান্ত গন্তব্য ছিল গাজীপুরের কাপাসিয়ার ধাঁধার চর। সেখানে নদীকে ঘিরে আয়োজন হয় আলোচনা, কবিতা পাঠ ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- সুইডেন এম্বাসির জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ বিভাগের প্রধান, ফার্স্ট সেক্রেটারি নায়োকা মার্টিনেস বেক্সস্ট্রম, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক সোলায়মান হায়দার, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোবাশ্বের হোসেন, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষের পরিচালক একেএম আরিফ উদ্দিন, বাপার সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির ও বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মনির হোসেন প্রমুখ।

উৎসবমুখর এই নদীযাত্রায় ছিল সচেতনতার বার্তা ও ঐক্যের অঙ্গীকার—শীতলক্ষ্যা নদীকে বাঁচাতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে এখনই।