ফরিদপুরের ভাঙ্গায় দুই দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে অন্তত ৬০ জন আহত হয়েছেন। গতকার দুপুরে সংঘটিত সংঘর্ষের জেরে সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে পুনরায় একপক্ষে অন্যপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চালায়।
এ সময় বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের স্বজনদের। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হলেও পুলিশকে উপেক্ষা করে বিবাদমান দলের নারী ও পুরুষেরা লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল ছোড়াছুড়ি এবং দেশীয় অস্ত্রের মহড়ায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে গোটা এলাকায়।
দুদিনের সংঘর্ষে আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ও ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হামিরদী ইউনিয়নের গোপীনাথপুর গ্রামে একটি শালিসি চলাচলকালীন সময় গতকাল সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। সেই জের ধরে একই স্থানে আজ সকালে ওই গ্রামের সায়মন মাতুব্বরের দলের মিন্টুকে একই এলাকার কুদ্দুস মাতুব্বরের লোকজনকে মারধর করায় দুইদল গ্রামবাসীর মধ্যে ফের তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
একপর্যায়ে তারা মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুই পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে কমপক্ষে ১৫ জন আহত এবং প্রায় ২০টি ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় সংঘর্ষকারীরা। এ নিয়ে গত দুইদিনের সংঘর্ষে অন্তত ৬০ জন আহত হন৷ খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানা পুলিশ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ঘটনাস্থলে পৌঁছে উভয়পক্ষের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে গোটা এলাকায় এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
উল্লেখ্য, রোববার (২ নভেম্বর) বিকেলে একটি জমি মাপার বৈঠকে বসা নিয়ে দুইদল গ্রামবাসী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে একে অপরের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। বিকেল ৩টা থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিরামহীন গতিতে চলতে থাকে সংঘর্ষ। এতে উভয়পক্ষের ৫০ জন গুরুতর আহত হন।
ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. তানজীরুল ইসলাম মামুন জানান, গতকাল দুই পক্ষের সংঘর্ষের জেরে আজ প্রায় ১৫ জন রোগী চিকিৎসা নিতে হাসপাতালে আসেন। আহতদের কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফ হোসেন জানান, রোববারের ঘটনা সূত্র ধরে আজ সকাল থেকে সংঘর্ষে দুই দলের সংঘর্ষে বেশ কিছু বাড়িঘর ভাঙচুর করায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পুলিশ অতিরিক্ত মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে আজ পৌর সদর এলাকার বাস্তখোলা সদরদী গ্রামে সিরাজুল ইসলাম ও মন্নু মাতুব্বর দলের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সংঘাতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন৷