ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে পূর্ব শত্রুতার জেরে ও নদীতে গোসল করাকে কেন্দ্র করে পরমেশ্বরদী গ্রাম ও তেলজুড়ী বাজারে ব্যাপক হামলা ও বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ সময় সালথা উপজেলার খারদিয়া গ্রামের কমপক্ষে ৩৫ জন আহত হন।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) সকালে উপজেলার শেখর ইউনিয়নের তেলজুড়ী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় দেশীয় অস্ত্রসহ ২ জনকে আটক করা হয়েছে।
আহতদের মধ্যে ১৫ জন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চিকিৎসা নেন এবং ৫ জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ নভেম্বর উপজেলার পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের রাকিব শেখের ছেলে রাজ (৭) ও হারুন শেখের ছেলে রহমতের (১০) মধ্যে নদীতে গোসল করা নিয়ে মারামারি হয়। এরপর ২২ নভেম্বর রাতে বিষয়টি মিমাংসার জন্য সালিশ বৈঠক হয়। কিন্তু সালিশ বৈঠকে সন্তুষ্ট হননি হারুন শেখ।
এর জেরে উপজেলার শেখর ইউনিয়নের তেলজুড়ী বাজার ও পরমেশ্বরদী পশ্চিমপাড়া এলাকায় অতর্কিত হামলা চালান সালথার খারদিয়া ও পরমেশ্বরদীর এক অংশের লোকজন। এতে ৩৫ জন আহত হন।
তাদের মধ্যে গুরুতর আহত হন- শেখর ইউনিয়নের দৈবকনন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা আফতাব (৪২), দূর্গাপুর চকপাড়া গ্রামের নাদেন (২৪), সবজি ব্যবসায়ী রেজাউল (৫০), বাজিতপুর গ্রামের বিপ্লব (৩৫), তেলজুড়ী গ্রামের ওহিদ (৪০), ইউনুস (৫০) ও দূর্গাপুর গ্রামের লিপটন শিকদার (৩৫)। বাকিদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সালথা উপজেলার খারদিয়ার ইউনিয়নের মুশফিক বিল্লাহ জিহাদ ও টুলু মিয়ার লোকজন তেলজুড়ীতে আক্রমণ করে। এতে কমপক্ষে ৩৫ জন আহত হন। এ সময় তেলজুড়ী এলাকায় ১৮টি ঘরবাড়ি ও বাজারের ৫টি দোকানে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।
দূর্গাপুর গ্রামের ইলিয়াস মোল্লা বলেন, পাশের সালথা উপজেলার খারদিয়া গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পরমেশ্বরদী পশ্চিমপাড়া গ্রামে ও আমাদের শেখর ইউনিয়নের লোকজনের ওপর অতর্কিত হামলার ঘটনায় নিন্দা জানাই। আমাদের লোকজনকে তারা আহত করেছে। আমরা এর বিচার চাই।
এ বিষয়ে খারদিয়ার ইউনিয়নের মুশফিক বিল্লাহ জিহাদ ও টুলু মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
শেখর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রইসুল ইসলাম পলাশ বলেন, খারদিয়া গ্রামের বাসিন্দা মুশফিক বিল্লাহ জিহাদ মিয়া ও তার মামা ইলিয়াস কাজী যৌথভাবে এক থেকে দেড় হাজার লোক ঢাল, সড়কি ও দেশীয় অস্ত্র সজ্জিত হয়ে আমাদের লোকজনের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী, বোয়ালমারী সার্কেল) আজম খান বলেন, পার্শ্ববর্তী সালথার থেকে কিছু লোকজন ওই এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে প্রবেশ করে। এলাকার দুটি বাচ্চা গোসল করা নিয়ে মারামারি করে। এর জের ধরে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তিনি আরও বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে আমরা প্রকৃত দোষীদের আটক করবো। এ ঘটনায় মামলা হবে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ২ জনকে আটক করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।