জিপিএ-৫ পাওয়া শয্যাশায়ী আরিফা হতে চান চিকিৎসক

খুলনায় অসুস্থ হয়ে ঘরের বিছানায় শুয়ে থাকা মেধাবী আরিফা জান্নাত আসফি। নগরীর সরকারি ইকবাল নগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছেন।

তার বাবা আতিয়ার রহমান আনসার সদস্য, মা সুলতানা পারভীন গৃহিণী। দুইবোনের মধ্যে বড় আরিফা। ছোটোবোন আশরাফি আল শোভা এবার অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছে। খুলনা মহানগরীর ময়লাপোতা মোড় এলাকার একটি কোয়াটারে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন তারা।

ছোটবেলা থেকেই লেখাপড়ায় মনোযোগী তিনি। প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও পঞ্চম শ্রেণিতে  বৃত্তি পেয়েছেন। বাসায় রয়েছে রচনা, হাতের লেখাসহ একাধিক প্রতিযোগিতার সনদ ও ক্রেস্ট। যা এখন সুযোগ পেলেই উল্টিয়ে দেখেন ও চোখের পানি ফেলেন। 

মেধাবী এ শিক্ষার্থীর ২০২২ সালে নবম শ্রেণিতে পড়াকালীন সময়ে অ্যাপেন্ডিসাইটিসের সমস্যা ধরা পড়ে। অপারেশনের পর ২/৩ মাস ভালো ছিলেন। এরপর শুরু হয় কোমড়ের ব্যথা। চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এমআরআই করানো হয়েছিল। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন muscle spasm রোগ হয়েছে তার।

পরীক্ষার সময় খুব অসুস্থ ছিলেন আরিফা জান্নাত আসফি। পরীক্ষা কেন্দ্রে যাবার সময় খুব কষ্ট হয়েছে, বসতেও পারতেন না। শুয়ে শুয়েই লিখেছেন তিনি। হলে গেছেন অ্যাম্বুলেন্সে করে।  

আরিফার পরীক্ষার প্রস্তুতি ভালো ছিল, প্রশ্নও কমন পড়েছিল। কিন্তু অনেক জানা জিনিস লিখে আসতে পারেননি। কারণ হাত অবস হয়ে আসতো। তখন আবার স্বাভাবিক হওয়ার জন্য কিছু সময় অপেক্ষা করতে হইছে। 

আরিফার চিকিৎসার ব্যয় জোগাতে হিমশিম খাচ্ছে তার পরিবার। তার চিকিৎসার জন্য প্রায় ৫ লাখ টাকার প্রয়োজন। এ ব্যয় তাদের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। এজন্য চেয়েছেন বৃত্তবানদের সহযোগিতা।

আরিফা জান্নাত আসফি বলেন, সকলের দোয়া এবং আমার পরিশ্রমের ফলাফল আমি পেয়েছি। আমি অনেক খুশি। সকলের দোয়া থাকলে ভবিষ্যতে স্বপ্নপূরণ করতে পারবো।  আমার এখন খুব ভয় হয়, আমার স্বপ্নপূরণের আগেই যেন স্বপ্নটা ভেঙে না যায়।

আরিফা জান্নাত বলেন, আমি সুস্থ স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেলে চিকিৎসক  হয়ে গরিব  মানুষের ফ্রি সেবা করবো। তাদের যেন চিকিৎসার অভাবে ভুগতে না হয়।
আরিফার মা সুলতানা পারভীন বলেন, অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি। তারা উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যেতে বলেছেন। কিন্তু মেয়ের ব্যয় বহন করা আমার পরিবারের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই সবার কাছে দোয়া ও সহযোগিতা প্রার্থনা করছি।