ঝিনাইদহের শৈলকুপার রঘুনন্দনপুরে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা দেখতে ভিড় করেন শত শত নারী-পুরুষ। কেউ প্রথমবার, আবার কেউ অনেকদিন পর হারানো এই খেলা দেখে উচ্ছ্বসিত হন। এ সময় দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে চারপাশ।
রোববার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে ঢাক, ঢোল ও কাসার ঘণ্টার সঙ্গে নৃত্য আর অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করেন খেলোয়াড়রা। এরপর শুরু হয় মূল আকর্ষণ। দুইজন লাঠিয়াল বাদ্যের তালে ঝাঁপিয়ে পড়েন একে অন্যের উপর। আত্মরক্ষার পাশাপাশি প্রতিপক্ষকে কাবু করতে মেতে ওঠেন তারা। প্রতিপক্ষের আঘাত প্রতিরোধে ব্যর্থ হলেই যেন আনন্দে ফেটে পড়েন দর্শকরা।
শহুরে ব্যস্ত জীবন আর কর্মব্যস্ততায় অনেকের দেখা হয় না এমন আয়োজন। প্রায় হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী এ খেলাকে কেন্দ্র করে গ্রামটিতে শুরু হয় উৎসবের আমেজ। যান্ত্রিকতার আগ্রাসন আর ব্যস্ততায় ভুলতে বসা গ্রামীণ এ খেলা দেখতে ভিড় করেন নারী-পুরুষ ও শিশুরা। গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই আসে আত্মীয়। সকাল থেকেই দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে রঘুনন্দনপুর গ্রামটি।
দর্শক শরিফুল ইসলাম বলেন, অনেক দিন পর লাঠি খেলা দেখলাম, খুব ভালো লাগলো। এমন আয়োজন প্রতিবছর হলে ভালো হয়। তাহলে প্রায় হারিয়ে যাওয়া গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা বর্তমান প্রজন্মেও কাছে টিকে থাকবে আনন্দেও খোরাক হয়ে।
মফিজ মিয়া জানান, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা এখন আর তেমন একটা চোখে পড়ে না। তাই আয়োজকদের বলবো, এমন আয়োজন নিয়মিত করতে। তাহলেই গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এ খেলা টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে।
আয়োজক মনিরুজ্জামান সজীব জানান, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতেই আমি এমন আয়োজন করেছি। আশা করি, আগামিতেও এমন আয়োজন করবো।
দিনভর লাঠি খেলার আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন ঝিনাইদহ ও রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার লাঠিয়ালরা। এমন আয়োজন প্রতিবছর করার দাবি স্থানীয় দর্শকদের।