৬০ বছর তৈরি করছেন ছাতা

ঈমান আলীর কাজের কাছে পরাস্ত বয়স

প্রতিদিন সকালের নাস্তা সেরে পাঞ্জাবী গায়ে দিয়ে হালকা পাতলা গড়নের শরীর নিয়ে হেলেদুলে গ্রামের কাঁচা পথে দীর্ঘ ৬ কিলোমিটার পেরিয়ে শহরের দোকানে আসেন ঈমান আলী। দেখে মনে হবে বয়সের ভারে অবসরে যাওয়া একজন বয়োজ্যেষ্ঠ বৃদ্ধ। তবে তার কাজের প্রতি একাগ্রতা এতটেই বেশি যে, এখনও টগবগে যুবকের মতই পরিশ্রম করে যান সকাল থেকে সন্ধ্যা।

শহরের একটি দোকানে তিনি ছাতা তৈরি করেন। তার কাজের স্পৃহা দেখে অভিভূত বর্তমান প্রজন্মের তরুণরা। অনেকের কাছে এটা গল্পের মতই মনে হয়। ঈমান আলীর কাজের কাছে পরাস্ত বয়স। দেশ স্বাধীন হওয়ার আগ থেকে তিনি ছাতা তৈরি করে আসছেন। ছাতা তৈরির কাজ করে পাঁচ সন্তানকে বড় করে বিয়ে দিয়েছেন।

ঈমান আলী তার চাচার কাছে ছাতা তৈরির কাজ শিখেছেন। সেই সময়ে তেমন একটা কাজ পাওয়া যেতো না। তাই কিছুটা বাধ্য হয়ে এই পেশা বেছে নেওয়া। কাজ করতে করতে এখন ছাতা তৈরি করা তার একরকম নেশায় পরিণত হয়েছে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি কাজ করে যেতে চান।

ঈমান আলীর একটা ছাতা তৈরি করতে সর্বোচ্চ সময় লাগে ১৫ মিনিট। একদিনে প্রায় ৩৬-৪৮ টা ছাতা বানাতে পারেন। তার তৈরি ছাতা চলে যায় গ্রামের হাট-বাজারে। সেখানে খুচরা দামে গ্রাহকের কাছে বিক্রি করা হয়।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে ময়মনসিংহ নগরীর ছোটবাজারে একটি ছাতার দোকানে কাজ শুরু করে আজ অবধি একই দোকানে কাজ করে যাচ্ছেন।

নয় মাস ছাতার কাজ করেন আর বাকি তিন মাস অন্যকাজ করেন। ফাল্গুন থেকে শ্রাবণ এই চার মাস ছাতার সবচেয়ে বেশি চাহিদা এই সময়টাতে বেশি ছাতা বিক্রি করা হয় বলে জানান ঈমান আলী।