নেত্রকোনায় স্পিডবোট ডুবি

ধনু নদে নিখোঁজ ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার

নেত্রকোনার খালিয়াজুরীর ধনু নদে স্পিডবোট ডুবির ঘটনায় ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূর থেকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে মোট চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হলো।

উদ্ধার ব্যক্তিরা হলেন- খালিয়াজুরির আন্ধাইর গ্রামের মোফায়েল মিয়ার মেয়ে ঊষামণি (৫), একই গ্রামের স্বপন মিয়ার মেয়ে মোছা. লাইলা আক্তার (৭), নবাব মিয়ার মেয়ে মোছা. শিরিন আক্তার (১৮) ও সামছু মিয়ার মেয়ে সামিয়া আক্তার (১১)।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, নিখোঁজদের মধ্যে শনিবার দুপুরে  ঘটনাস্থল থেকে ৫০০ মিটার দূরে ঊষামণির (৫) ভাসমান লাশ উদ্ধার করা হয়। 

এলাকাবাসী এবং উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) আন্ধাইর গ্রামের নবাব মিয়ার ছেলে রানা মিয়ার বিয়ে উপলক্ষে কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলা থেকে একটি স্পিডবোট ভাড়া করে আনা হয়। স্পিডবোটে চড়ে বরসহ বরযাত্রীদের ইটনা উপজেলার মৃগা গ্রামে কনের বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল।

বরযাত্রী রওয়ানা হওয়ার আগমুহূর্তে বিয়েবাড়ির ১৫ জন স্পিডবোটটি নিয়ে কিছুক্ষণের জন্য হাওরে ঘুরতে যান। এ সময় ধনু নদে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বাল্কহেডকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সময় কাছে থাকা জেলেদের নৌকার সঙ্গে স্পিডবোটটির সংঘর্ষ ঘটে। তখন নৌকার জেলেরা দ্রুত স্পিডবোটে উঠে এসে চালকের সঙ্গে ঝগড়া বাধায়। হুড়োহুড়ির একপর্যায়ে স্পিডবোটটি উল্টে যায়। এতে ওই চারজন নিখোঁজ এবং তিনজন আহত হন। বাকিরা সাঁতার কেটে তীরে পৌছান।

ওই স্পিডবোট ডুবিতে বেঁচে ফেরা আন্ধাইর গ্রামের ইয়াসমিন আক্তার বলেন, ‘আমাদের স্পিডবোটটি একটি নৌকার সঙ্গে ধাক্কা লাগে। তখন ওই নৌকায় থাকা লোকজন তর্কাতর্কির পর স্পিডবোটে উঠে চালককে মারধর করে। একপর্যায়ে স্পিডবোটটি ডুবিয়ে দেয়। তখন সবাই সাঁতরে তীরে উঠলেও চারজন নদে ডুবে নিখোঁজ হয়।’ তিনি ওই নৌকার লোকদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।’

খালিয়াজুরির ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এম এ কাদের বলেন, ‘ঘটনার পরপর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার তৎপরতা চালান। রোববার পর্যন্ত ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘স্পিডবোট ডুবিয়ে দেওয়ার যে অভিযোগ করেছেন বেঁচে ফেরা লোকজন, সে বিষয়ে তদন্ত হবে। আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’