শেরপুরে গারো পাহাড়ি এলাকার ৪টি নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। উজানের পানির প্রবাহ কিছুটা কমলেও ভাটি এলাকায় নতুন করে ৫টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জেলার সদরের ব্রহ্মপুত্র নদে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এদিকে মহারশি ও চেল্লাখালী নদীর পানিতে ডুবে নিখোঁজ হওয়া দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা। নালিতাবাড়ীর বুরুঙ্গা ব্রিজ এলাকায় লাকড়ি সংগ্রহ করতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী হুমায়ুন (১৩) এবং তার চাচাতো ভাই আতিক হাসানের মরদেহ পাওয়া যায়।
প্রথমে জামালপুর থেকে ডুবুরি দল এসে উদ্ধার অভিযান চালালেও ব্যর্থ হয়। পরে রাতে স্থানীয়রা হুমায়ুনের মরদেহ উদ্ধার করে। একইদিন ঝিনাইগাতীর তামাগাঁও এলাকায় নদীতে ভেসে আসা গাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া ইসমাইলের (১৭) মরদেহ শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে খৈলকুড়া এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়।
ঝিনাইগাতী উপজেলার মহারশি নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় তীরবর্তী অন্তত ১০টি পরিবারের ঘরবাড়ি ভেসে গেছে। খৈলকুড়া বাজার এলাকায় বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পানির তীব্র স্রোতে এ ঘরগুলো মুহূর্তেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। সেই সঙ্গে বিদ্যুতের খুঁটিসহ বিভিন্ন স্থাপনাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জানা গেছে, জেলায় রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রার ৯৩ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমির মধ্যে ৯৯ শতাংশ ধান রোপণ সম্পন্ন হয়েছে। পাহাড়ি ঢলে ঝিনাইগাতীর অন্তত ১১৩ হেক্টর রোপা আমন ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এতে কৃষকরা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
আজ সকালে শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, বর্তমানে জেলার সব নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় ভাটির এলাকার মানুষ এখনো আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে।
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য প্রাথমিকভাবে ত্রাণ সহায়তা দিয়েছি। একটি স্কুলে থাকার ব্যবস্থা করেছি। তাদের স্থায়ী পুনর্বাসনের জন্য ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে চাহিদা প্রেরণ করেছি। আর স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ, এটা আমাদেরও দাবি।