পরীক্ষায় বাড়তি সময় না দেওয়ায় কক্ষ পরিদর্শককে মারধর

বগুড়ার নন্দীগ্রামে এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে কক্ষ পরিদর্শককে মারধরের অভিযোগে পরীক্ষা এবং সংগঠন থেকে বহিষ্কার হয়েছেন নন্দীগ্রাম মনসুর হোসেন ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ শাকিল। নির্ধারিত সময় শেষে উত্তরপত্র চাওয়ায় কক্ষ পরিদর্শককে মারধর করেন শাকিল। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) সকালে উপজেলার নন্দীগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০৩ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।

ছাত্রদল নেতা শাকিল উপজেলার মাঝগ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে। মারধরের শিকার কক্ষ পরিদর্শক ফেরদৌস আলী  নন্দীগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় নন্দীগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়। এমসিকিউ পরীক্ষার সময় শেষ হওয়ার পরও ২০৩ নম্বর কক্ষে পরীক্ষা দিচ্ছিলেন মনসুর হোসেন ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ শাকিল। এমসিকিউ প্রশ্নের নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পর কক্ষ পরিদর্শক ফেরদৌস আলী পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্র জমা দিতে বলেন। তখন সবাই উত্তরপত্র জমা দেন। তখনও লিখছিলেন ছাত্রদল নেতা শাকিল। কক্ষ পরিদর্শক ফেরদৌস আলী খাতা চাইলে দিতে অস্বীকৃতি জানান।

তিনি খাতা জমা না দেওয়ায় পরিদর্শক লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দিতে পারছিলেন না। এ নিয়ে অন্য পরীক্ষার্থীরা আপত্তি জানালে পরিদর্শক শাকিলের হাত থেকে খাতা কেড়ে দেন। এরপর লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেন। এতে শাকিল ক্ষুব্ধ হন। তিনি পরীক্ষা দেবেন না বলে খাতা ও প্রশ্ন নিয়ে কক্ষ থেকে বের হয়ে যান। সেইসঙ্গে নিজেকে নন্দীগ্রাম উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন আদরের ভাগনে ও মনসুর হোসেন ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি পরিচয় দিয়ে কক্ষ পরিদর্শককে হত্যার হুমকি দেন। তখন অন্য শিক্ষকরা অনুরোধ করে তাকে কক্ষে ফিরিয়ে আনেন। এ সময় শাকিল কক্ষে এসে পরিদর্শক ফেরদৌস আলীকে মারধর করে বেরিয়ে যান।

এ ব্যাপারে নন্দীগ্রাম সরকারি মহিলা ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রের সচিব সহকারী অধ্যাপক আমজাদ হোসেন বলেন, কক্ষ পরিদর্শককে মারধরের ঘটনায় শাকিলকে পরীক্ষা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

কক্ষ পরিদর্শক ফেরদৌস আলী বলেন, আমাকে হত্যার হুমকির ঘটনায় তার বিরুদ্ধে নন্দীগ্রাম থানায় জিডি করেছি। সেইসঙ্গে বিষয়টি শিক্ষাবোর্ড, জেলা প্রশাসন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছি।

নন্দীগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোসা. লায়লা আঞ্জুমান বানু বলেন, এ ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষক থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

এদিকে, এ ঘটনায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে মনসুর হোসেন ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ শাকিলকে সংগঠনটি থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুরে জেলা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক সোহান ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।