পাবনায় অপহরণের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১, আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে পুলিশ তৎপর

‎পাবনা শহরে এক যুবককে অপহরণ করে ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় ও বিবস্ত্র করে মিথ্যা স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করার ঘটনায় জড়িতদের মুলহোতা সিয়াম হোসেন (১৮) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

‎শনিবার (৯ আগস্ট) বিকেলে তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাতে গোয়েন্দা ও থানা পুলিশের যৌথ প্রচেষ্টায় শহরের মেরিল বাইপাস এলাকার একটি মেস থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

‎অভিযুক্ত সিয়াম হোসেন জেলার ফরিদপুর উপজেলার মৌদ পূর্ব পাড়ার আমিরুল ইসলামের ছেলে। তার পরিবার শহরের পৈলানপুরের ভাড়া বাসায় থাকে।

‎পুলিশ ও এজাহার সূত্রে জানা গেছে , গত বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুরে পাবনা শহরের চারতলা মোড় থেকে ৩-৪ জন দুর্বৃত্ত চাকু ঠেকিয়ে সোলায়মান হোসেন নামের এক যুবককে অপহরণ করে। পরে তাকে চারতলার একটি পরিত্যক্ত ভবনের কক্ষে নিয়ে মারধর করে তার কাছে থাকা ৫ হাজার ৬০০ টাকা ও তার বিকাশে থাকা ২১৫ টাকা ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা।

পরে লোহার হাতুড়ি, জিআই পাইপ ও বাঁশের লাঠি দিয়ে তাকে মারধর করে বন্ধুর কাছ থেকে বিকাশে ৫ হাজার টাকা নিতে বাধ্য করে। এর কিছুক্ষণ পর তাকে আবারও ১০ হাজার টাকা বিকাশে আনতে বললে তা পাঠাতে বিলম্ব হওয়ায় আবারও তাকে ব্যাপক মারধর করে। এসময় দুর্বৃত্তদের দলে আরও কয়েকজন যোগ দিয়ে ৫-৭ জন মিলে তাকে মারধর করে।

পরে তার মানিব্যাগে ব্যাংকের একটি এটিএম কার্ড পায়। দুর্বৃত্তরা এটিএম কার্ডের পিনকোড চায়। পিনকোড বলতে রাজি নাহলে সোলায়মানের গলায় চাকু ও মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে পিনকোড বলতে বাধ্য করে।

‎এরপর কার্ড থেকে চার দফায় দুর্বৃত্তরা ৬০ হাজার টাকা তুলে নেয়। পরে তাকে উলঙ্গ করে ওই এলাকায় অশ্লীল কাজে এসেছিলো মর্মে একটি স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করে এবং সেটি ভিডিও করে দুর্বৃত্তরা। পরে কোথাও অভিযোগ দিলে তাকে প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে বিকেল পৌনে ৪ টার দিকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

এঘটনায় বিকেলে ভুক্তভোগী যুবক থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগ দায়েরের পরই পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগসহ কয়েকটি ইউনিট অপহরণকারীদের ধরতে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারসহ নানা তৎপরতা চালায়। পরে ভুক্তভোগীর ফোন থেকে বিকাশে টাকা স্থানান্তরের সূত্র ধরে সিয়ামকে গ্রেপ্তার করে।

‎এ ব্যাপারে পাবনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম বলেন, অভিযুক্ত একইধরণের অনেকগুলো ঘটনার সাথে জড়িত বলে আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে। সেগুলোও আমরা তদন্ত করবো। একই সাথে অপহরণকারীর মাথায় ঠেকানো আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারেরও চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। তাকে আদালতে তোলার পর ঘটনায় জড়িত অন্য ৬ জন সম্পর্কে তথ্য প্রদানসহ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিলে আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণ করে।