নাটোরের লালপুর উপজেলার কেশবপুর গ্রামে খলিশাডাঙ্গা নদীতে অপরিকল্পিত খননের ফলে গ্রামীণ সড়কসহ ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে ভাঙনের শঙ্কায় পড়েছে ২৫০ পরিবার। গ্রামবাসী এখন বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) গত বছর কোটি টাকার প্রকল্প নিয়ে নদী খনন ও গাইড ওয়াল নির্মাণ করে। কিন্তু নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও নানা অনিয়মের কারণে ৬ মাসের মধ্যেই ওয়ালে ফাটল ধরে। এরপর আবারও ভেকু দিয়ে নদী থেকে অবৈধভাবে মাটি খনন করে ওয়ালের ব্যাক সিলিং ভরাট করায় ক্ষতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে।
ফলে নদীপাড়ের প্রায় ২৫০ পরিবার ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে। ইতোমধ্যে একটি বাড়ি ভাঙনের কবলে পড়েছে। গ্রামের একমাত্র সড়ক নদীতে তলিয়ে যাওয়ায় কোনো ছোট যানবাহনও গ্রামটিতে প্রবেশ করতে পারছে না।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ছোট গাড়ি গ্রামটিতে প্রবেশ করতে না পারায় ৫০ মিটার নদী পাড় থেকে ফসলি জমির কাঁদাপানি মাড়িয়ে প্রায় দেড় কিলোমিটার ঘুরে সড়কে উঠতে হচ্ছে। গ্রামবাসী নিজেদের উদ্যোগে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে ঝুঁকি নিয়ে পায়ে হেঁটে চলাচল করছেন। বিশেষ করে শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের জন্য এটি মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মোস্তাক আহম্মেদ ও আল-আমিন বলেন, ছোটবেলা থেকে দেখি বর্ষা ছাড়া নদীতে পানি থাকে না। তবুও বিগত সময়ে আওয়ামী লীগ নেতারা ছত্রছায়ায় ও দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলীদের যোগসাজশে অপরিকল্পিত নদী খনন করেছে। এতে এবারের বর্ষায় নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। আমরা দ্রুত কার্যকরী প্রতিকার চাই।
এর আগে গত ২৭ মে ‘নির্মাণের ৬ মাসেই গাইড ওয়ালে ফাটল, ভাঙ্গনের আশঙ্কায় ২০০ পরিবার’ শিরোনামে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর সংশ্লিষ্ট প্রকল্প শেষ না করেই কাজ বন্ধ করে দেয় বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে বাকি কাজ আর শেষ হয়নি।
এ বিষয়ে বিএমডিএ’র বড়াইগ্রাম জোন (লালপুর) উপসহকারী প্রকৌশলী আবুল বাসার স্বীকার করেছেন, বর্ষার আগে নিয়ম বহির্ভূতভাবে নদী থেকেই মাটি খনন করে ওয়ালের ফাঁকা জায়গা ভরাট করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, রাস্তা বিলীন হওয়ায় আপাতত বিকল্প ব্যবস্থা নিতে হবে। বর্ষা শেষে স্থায়ী সমাধানের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হবে।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান বলেন, প্রকল্প বন্ধের বিষয়টি সমন্বয় সভায় আলোচনার জন্য উপস্থাপন করা হবে। পাশাপাশি পৌরসভা থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।