ফুলবাড়ীতে বেড়েছে চোরের উপদ্রব

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ছিঁচকে চোরের উপদ্রব বেড়েছে। পাশাপাশি সিঁদেল চোরেরও উপদ্রব বেড়েছে উপজেলার সর্বত্র। একের পর এক বাড়িতে সিঁদ কেটে ঘরে ঢুকে চোরেরা নিয়ে যাচ্ছে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান জিনিসপত্র। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। তবে পুলিশ বলছে, চুরি ঠেকাতে তাদের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
 
শুক্রবার  (১৩ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে উপজেলা সদরের অদূরে বিদ্যাবাগিশ গ্রামে দুটি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটেছে।
 
ওই এলাকার স্কুল শিক্ষক ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি গোলাম মর্তুজা বকুল বলেন, গতরাতে আমার প্রতিবেশী মিথুন চন্দ্র ও সন্তোষ চন্দ্র রায়ের বাড়িতে চুরি হয়েছে। চোরেরা ঘরে ঢুকে নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, স্মার্ট মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে গেছে। এর আগে আমাদের শিক্ষক সমিতির কার্যালয়ে চুরির ঘটনা ঘটে।
থানার পাশেই শিক্ষক সমিতি কার্যালয়টি অবস্থিত। অথচ পরপর ২ দিন কার্যালয়টিতে চুরির ঘটনা ঘটে। প্রথম দিন তালা ভেঙে কার্যালয়ে ঢুকে ১২টি সিলিং ফ্যান এবং পরের দিন আবার একই কায়দায় ৪টি ফ্যান চুরি হয়। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
 
পুলিশ আমাদের কার্যালয়টি পরিদর্শন করে চোরদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু এ পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।

শুক্রবার রাতেই উপজেলার ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নে আরেকটি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটেছে। রাবাইতারী গার্লস স্কুলের পাশে আব্দুস সোবহান মুন্সীর বাড়িতে সিঁদ কেটে ঘরে ঢুকে নগদ ৩০ হাজার টাকা, স্বর্ণালংকার ও একটি স্মার্ট মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে চোররা।

গত বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের ঘোগারকুটি গ্রামে এক সাথে ৮টি বাড়িতে সিঁদ কেটে ঘরে ঢুকে নগদ টাকসহ কয়েক লক্ষ টাকার মালামাল চুরি হয়। এর আগে ৩১ আগস্ট রাতে ভাঙ্গামোড় ইউনিয়ন রামরামসেন এলাকায়ও ৬টি বাড়িতে সিঁদেল চুরির ঘটনা ঘটে।
 
 
চোরের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না মসজিদের মাইকের মেশিন, ব্যাটারি, সোলারের ব্যাটারি, মসজিদের বারান্দায় কিংবা বাড়ির উঠানে রাখা বাইসাইকেল। মসজিদের ওযু খানার বৈদ্যুতিক পাম্প। চার্জে রাখা অটোরিকশার ব্যাটারি ও চার্জার। রান্না ঘরের রাইচ কুকার, প্রেসার কুকার, গ্যাসের চুলা ও গ্যাস সিলিন্ডার। অহরহ চুরি যাচ্ছে কৃষকের শ্যালো মেশিন ও বৈদ্যুতিক সেচ পাম্প।

চোরের উপদ্রবে অতিষ্ঠ উপজেলাবাসী চুরি রোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

বড়ভিটা মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ নূর মোহাম্মদ মিয়া বলেন, চোরের এমন উপদ্রব আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির বিষয়টি স্পষ্ট করে তোলে। একের পর এক চুরির ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। চুরি ও অপরাধ দমনে জনগণকে সচেতন থাকার পাশাপাশি পুলিশকে কঠোর হতে হবে।

ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শওকত আলী সরকার বলেন, চুরি ও অপরাধ দমনে ফুলবাড়ী থানা পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। চেকপোস্টে তল্লাশি, পুলিশি টহল ও জরুরী সেবা চালু রাখা হয়েছে। তারপরও কিছু কিছু এলাকায় চুরি হচ্ছে। তবে এসব ঘটনায় থানায় কেউ অভিযোগ দায়ের করেননি। অভিযোগ পেলে এসব অপরাধ দমন করা অনেকটাই সহজ হবে।