স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি হবিগঞ্জের মাধবপুরের পুরাইকলা গ্রাম থেকে কাউড়া পর্যন্ত ২ কিলোমিটার সড়কে। উপজেলার সদরে যাওয়ার একমাত্র সড়কটির বেহাল দশায় চড়ম ভোগান্তি পোহাচ্ছে কয়েক হাজার মানুষ।
সড়কের এমন অবস্থার কারণে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই মারা যান অনেক রোগী। মন্ত্রী-এমপিসহ জনপ্রতিনিধিরা রাস্তা উন্নয়নের কথা দিলেও হয়নি কোনো উন্নতি।
পুরাইকলা বাজারের এখলাছুর রহমান নামে একজন ব্যবসায়ী জানান, ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে পণ্যগুলো নিয়ে আসে। তখন তারা ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রি করতে পারে না। তিনি বর্তমান সরকার ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে দাবি জানান সুন্দর করে রাস্তাটি গড়ে দেবার জন্য।
পুরাইকলা মাদ্রাসায় পড়ূয়া এক ছাত্রের পিতা জানান, আমার ছেলেকে পুরাইকলা মাদ্রাসায় পড়াতাম। রাস্তা ভাল না, তাই টাংটুং নিয়ে নিয়ে যাইতাগাছি (চলে যাচ্ছি)। রাস্তাঘাট ভাল না, গাড়ি-ঘোড়া চলে না হাইটা (হেঁটে) যাইতেগাছি।
পুরাইকলা গ্রামের এক বাসিন্দা জানান, কিছুদিন আগে বোনকে ডেভিভারি করানোর জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাবার পথেই তার বোন মারা যান।
পুরাইকলা গ্রামের এক যুবক জানান, স্বাধীনতার ৫৫ বছর আজ। আর এই রাস্তার কারণে কম হলেও কয়েকশ গর্ভবতী নারী জীবন দিয়েছে। এই রাস্তায় কয়েকশ বৃদ্ধ জীবন দিয়েছে শুধু মাত্র হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময়। ওয়ার্ড থেকে শুরু করে এমপি পর্যন্ত এই রাস্তা দেখে গেছে। মাহবুব আলী সাহেব (দুইবারের এমপি, একবারের মন্ত্রী), তিনি নিজে এসে এই রাস্তা দেখে গেছে, বলেছেন রাস্তা করে দেবেন। ব্যারিস্টার সুমনও আসছিলেন। অবশ্য ব্যারিস্টার সুমনকে দোষ দিয়ে লাভ নেই, তিনি সময় পাননি।
প্রশ্ন হল, আমরা কি ভ্যাট-ট্যাস্ক কারো থেকে কম দেই। আমরা কোন দেশে বাস করি? বলতে বাধ্য হচ্ছি, আমাদের চেয়ে রোহিঙ্গারা অনেক ভাল আছে।
পুরাইকলা গ্রামের ইউপি সদস্য মো. নিজাম উদ্দিন জানান, পুরাইকলা গ্রামটি অবহেলিত। এ গ্রামের সঙ্গে যোগাযোগের দুইটি রাস্তা রয়েছে। একটি পুরাইকলা থেকে কাউড়া হয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যুক্ত হয়েছে। অপরটি হচ্ছে পুরাইকলা থেকে বাঘাসুরা। দুইটি রাস্তাই অবহেলিত। আমরা জেলা প্রশাসক ও উপজেলা কর্মকতার নিকট দাবি জানাই, দ্রুত সড়ক দুটি সংস্কার করার জন্য বরাদ্দ দেওয়ার জন্য।
মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহেদ বিন কাশেম জানান, রাস্তার সমস্যাটি সমাধান করার জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।