ট্রাইব্যুনালে টিপুর জানাজা সম্পন্ন, বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে বিকেল সোয়া তিনটায় ভাষা সৈনিক ও ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপুর জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। এরপর তার মরদেহে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে টিপুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

এরপর তার মরদেহ পল্টনে অবস্থিত বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির অফিস মুক্তি ভবনে নেওয়া হবে। সেখান থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে। পরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

শুক্রবার (১৫ মার্চ) সকাল ৮টার দিকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গোলাম আরিফ টিপু ইন্তেকাল করেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বার্ধক্যজনিত নানা অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। সম্প্রতি তিনি বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ল্যাব এইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার সকালে ইন্তেকাল করেন।

তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ভাষা সৈনিক ছিলেন। ১৯৫২ সালে রাজশাহীতে বাংলা ভাষা আন্দোলন তার নেতৃত্বেই সংগঠিত হয়। তিনি রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের রাজশাহী অঞ্চলের যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ভাষা আন্দোলনে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০১৯ সালে একুশে পদক প্রদান করে।

গোলাম আরিফ টিপু ১৯৫৮ সালে একজন আইনজীবী হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি একাধিকবার রাজশাহী আইনজীবী সমিতির সভাপতি, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য এবং বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হন।

ভাষা সংগ্রামী গোলাম আরিফ টিপুর মরদেহ সকালেই হাসপাতাল থেকে তার বেইলি রোডের বাসায় নেওয়া হয়। সেখানকার মসজিদে জুমার নামাজের পর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তার মরদেহ আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নেওয়া হয়। 

উল্লেখ্য, ১৯৩১ সালের ২৮ আগস্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কমলাকান্তপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন গোলাম আরিফ টিপু। তার বাবা আফতাব উদ্দিন আহমদ ছিলেন জেলা রেজিস্ট্রার। ৯ ভাইবোনের মধ্যে টিপু দ্বিতীয়।

গোলাম আরিফ টিপু কালিয়াচর বিদ্যালয় থেকে ১৯৪৮ সালে মাধ্যমিক ও রাজশাহী কলেজ থেকে ১৯৫০ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। একই কলেজ থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক সম্পন্নের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৫৪ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি আইনজীবী, মুক্তিযোদ্ধা ও ভাষা আন্দোলন কর্মী ছিলেন।