মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায়

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ২০তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন সহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ২০তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ আজ।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন প্যানেল এ সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করবেন।

এদিন ট্রাইব্যুনালের বিচারকাজের শুরুতেই ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের (আপ বাংলাদেশ) আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদকে জেরা করবেন শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন। এরপর নতুন সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়া হবে। এ মামলায় আরও তিনজনের সাক্ষ্যগ্রহণের আবেদন জানিয়েছে প্রসিকিউশন।

২১ সেপ্টেম্বর বিকেল পর্যন্ত চলে জুনায়েদের জবানবন্দি গ্রহণ। জেরা অসম্পূর্ণ থাকায় আজ পর্যন্ত তা মুলতবি করা হয়েছিল। একইদিন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এর আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের অবশিষ্ট জেরাও সম্পন্ন হয়।

প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, গাজী এমএইচ তামিম, ফারুক আহাম্মদ, আবদুস সাত্তার পালোয়ান, তারেক আবদুল্লাহ প্রমুখ।

এ মামলায় ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী জবানবন্দি দিয়েছেন। সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ছিল সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের সাক্ষ্য, যিনি রাজসাক্ষী হিসেবে বলেন, শেখ হাসিনা ও কামালের প্রত্যক্ষ নির্দেশে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে দেশব্যাপী হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়। তিনি এ ঘটনার জন্য ট্রাইব্যুনালের সামনে ক্ষমা চান এবং বহু অজানা তথ্য প্রকাশ করেন।

চিকিৎসক, সাংবাদিক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানবন্দিতেও সহিংসতা, গণহত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিবরণ উঠে এসেছে। শহীদ পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীরা এই ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত ১০ জুলাই শেখ হাসিনা, কামাল ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। প্রসিকিউশনের আনা পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে গণহত্যা, হত্যা ও অন্যান্য মানবতাবিরোধী অপরাধ অন্তর্ভুক্ত।

মোট আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে রয়েছে দুই হাজার ১৮ পৃষ্ঠার তথ্যসূত্র, চার হাজার পাঁচ পৃষ্ঠার জব্দতালিকা ও প্রমাণাদি এবং দুই হাজার ৭২৪ পৃষ্ঠার শহীদদের তালিকা। মামলায় মোট সাক্ষী রয়েছেন ৮১ জন। গত ১২ মে তদন্ত সংস্থা প্রতিবেদন জমা দেয় চিফ প্রসিকিউটরের কাছে।

আজকের জেরা ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে নতুন তিন সাক্ষীর আবেদন নিয়ে সিদ্ধান্ত দেবেন ট্রাইব্যুনাল। বিচারিক কার্যক্রম আরও কয়েক সপ্তাহ চলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।