গণবদলি ও শোকজের মুখে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি স্থগিত করে অবশেষে বার্ষিক পরীক্ষার কাজে ফিরছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। ফলে রোববার (৭ ডিসেম্বর) দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যথারীতি বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
আন্দোলনরত শিক্ষকদের সংগঠন ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’-এর নেতা শামছুদ্দিন মাসুদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কর্মসূচি স্থগিতের কারণ ব্যাখ্যা করে শামছুদ্দিন মাসুদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের স্বার্থ এবং অভিভাবকদের দাবির প্রতি সম্মান জানিয়ে আমরা পরীক্ষার কাজে ফিরছি। পাশাপাশি যেভাবে গণহারে শিক্ষকদের শোকজ ও বদলি করে হয়রানি করা হচ্ছে, তা বিবেচনায় নিয়ে আপাতত কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। তবে আমাদের দাবি আদায় হয়নি। বার্ষিক পরীক্ষা শেষে আমরা আলোচনা করে আবারও নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করব।’
বেতন গ্রেড উন্নীতকরণের দাবিতে গত ২৭ নভেম্বর থেকে লাগাতার কর্মবিরতি শুরু করেন সহকারী শিক্ষকরা। এরপর ১ ডিসেম্বর থেকে বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন এবং ২ ডিসেম্বর থেকে বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করছিলেন তারা।
শিক্ষকদের এই কঠোর অবস্থানের বিপরীতে সরকারও কঠোর পদক্ষেপ নেয়। গত ৪ ডিসেম্বর একযোগে ৪২ জন শিক্ষককে নিজ জেলা থেকে ভিন্ন জেলায় ‘প্রশাসনিক বদলি’ করা হয়। এছাড়া অনেককে শোকজ করা হয়। এই পরিস্থিতির পর কর্মসূচি স্থগিত করে পরীক্ষায় ফেরার সিদ্ধান্ত নিলেন শিক্ষকরা।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় ৩ লাখ ৮৪ হাজার শিক্ষক কর্মরত। বর্তমানে প্রধান শিক্ষকরা দশম গ্রেডে বেতন-ভাতা পেলেও সহকারী শিক্ষকরা পাচ্ছেন ১৩তম গ্রেডে। দীর্ঘদিনের এই বৈষম্য দূর করে দশম গ্রেডে বেতন-ভাতার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন সহকারী শিক্ষকরা।