আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৬ আগস্ট থেকে বন্ধ রয়েছে ঢাকার অন্যতম শীর্ষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সামসুল হক খান স্কুল অ্যান্ড কলেজ। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ছাত্রদের পক্ষ থেকে অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবি উঠলে নিজের চেয়ার বাঁচাতে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ রেখেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অধ্যক্ষ ড. মাহাবুবুর রহমান মোল্লার একক সিদ্ধান্তে কলেজটি বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্কুলের গভর্নিং বডির একাধিক সদস্য।
১৫ হাজারের অধিক ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন শিক্ষা ক্ষেত্রে সুনাম কুড়িয়েছে। সুনামের পাশাপাশি অনিয়মের আখড়ায় রুপান্তরিত হয়েছে কলেজটি। যা নিয়ে অভিভাবকদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নিলে স্কুল থেকে টিসি দিয়ে বের করে দেওয়ার পাশাপাশি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছিল খুদে বার্তায়। তখন থেকেই অভিভাবকদের তোপের মুখে পড়েন স্কুলের অধ্যক্ষ।
এ নিয়ে গত এক সপ্তাহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরে অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করছেন। একই সাথে স্কুলে অধ্যক্ষের আত্মীয় ও স্কুলের শিক্ষকরা বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরছেন। পড়াশোনায় পাশাপাশি তারা প্রতিষ্ঠানের সুনাম তুলে ধরছেন। তবে অধ্যক্ষের অনিয়মের বিষয়ে তারাও মুখ বন্ধ রেখেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষার্থীর অভিভাবকের দাবি, অধ্যক্ষ সুযোগ সন্ধানী লোক। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তিনি আগের রূপেই ফিরবেন। কোটা আন্দোলনের ঠিক আগ মৃহুর্তে স্কুলের অনিয়মের ডাকতে সদ্য সাবেক এমপিকে তিন কোটি টাকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্কুল বন্ধ রাখার বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর তপন কুমার সরকার দৈনিক খবর সংযোগকে বলেন, স্কুল খোলা রাখা বা বন্ধ করার বিষয়টি মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা অধিদপ্তর দেখে। তবে আমার জানা মতে ৬ আগস্ট থেকে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। কি কারণে সামসুল হক খান স্কুল এখনো বন্ধ রেখেছে বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টিতে আনা উচিত।
এ বিষয়ে শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন উইং) প্রফেসর এ বি এম রেজাউল করীম দৈনিক খবর সংযোগকে বলেন, স্কুল বন্ধ রাখার কোনো সুযোগ নেই। ৬ আগস্ট থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। যদি কেউ আদেশ অমান্য করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এখনি জানাছি। তারা দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এসব বিষয়ে জানতে সামসুল হক খান স্কুলের অধ্যক্ষ মাহাবুবুর রহমান মোল্লার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। ফোনে খুদে বার্তা পাঠিয়েও তার কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।