জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক সম্মান প্রথম বর্ষে ভর্তিতে পোষ্য কোটা সম্পূর্ণরূপে বাতিলের দাবিতে নতুন প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময় প্রশাসনিক ভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয় বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে একটি মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল হয়ে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ঘুরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে শেষ হয়।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে কয়েকজন শিক্ষার্থী পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে অনশনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) প্রশাসন এই কোটায় বেশ কিছু পরিবর্তন আনে। ক্যাম্পাসে জাকসুর তফসিল এবং আসন্ন ভর্তি পরীক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে তাঁরা অনশন ভাঙেন। এরপর সকালে মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি)কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আগের মতো পোষ্য কোটা বহালের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে যান। এ সময় ভবনের দেয়ালে ‘কোটা বাতিল করো’ লেখাসংবলিত পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেন কয়েকজন কর্মচারী।
এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে কয়েকজন শিক্ষার্থী সেখানে গেলে এক শিক্ষার্থীকে কর্মচারী ধাক্কা দিয়েছেন, এমন অভিযোগ ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকে। এরপর বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে যান এবং দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে কর্মচারীরা তাঁদের কর্মসূচি শেষ না করে চলে যান। এরপর বেলা আড়াইটার দিকে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
আন্দোলনকারীদের একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৫২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মেজবাহুল হক বলেন, ‘আমাদের একমাত্র দাবি অযৌক্তিক পোষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিল। এই কোটার ফলে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পায় না। যারা এই কোটার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়, তাদের থেকে একরকম পৈতৃক উত্তরাধিকার আর চাই না। আমরা নতুন করে এসব পৈতৃক উত্তরাধিকার দেখতে চাই না। পোষ্য কোটা সম্পূর্ণ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আমরা রেজিস্ট্রার বিল্ডিং ছাড়ব না।’
এর আগে কোটা বাতিলের দাবিতে রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে আট শিক্ষার্থী আমৃত্যু গণ-অনশন শুরু করেন। সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) উপাচার্য মোহাম্মদ কামরুল আহসানের আশ্বাসে তাঁরা অনশন ভাঙেন।