৩ দফা দাবি: রাবিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের কর্মবিরতির ঘোষণা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) প্রাতিষ্ঠানিক সকল সুবিধা (পোষ্য কোটাসহ) পুনর্বহাল করাসহ ৩ দফা দাবি জানিয়েছে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) উপাচার্য বরাবর দেওয়া এক স্মারকলিপিতে এ দাবি জানিয়েছে তারা।
 
ঘোষণা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবারের (১৮ সেপ্টেম্বর) মধ্যে দাবিগুলো মানা না হলে রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) থেকে পূর্ণদিবস কর্মসূচি পালন করবেন তারা। ইতোমধ্যে ৩ দফা দাবি সংবলিত এ চিঠি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তরে পাঠিয়েছেন তারা।
তাদের দাবিগুলো হলো-
 
১. প্রাতিষ্ঠানিক সকল সুবিধা বাস্তবায়ন করা,
২. সকল প্রশাসক প্রথা বাতিল করা এবং
৩ শিক্ষকগণের জন্য ব্যক্তিগত চেম্বারের ব্যবস্থা ও গবেষণার জন্য অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধি করা।
 
চিঠিতে বলা হয়েছে, আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে ২১ সেপ্টেম্বর থেকে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণদিবস কর্মবিরতি। এ সময় জরুরিসেবা ছাড়া ক্লাস-পরীক্ষাসহ সকল প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
 
চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দের পক্ষে স্বাক্ষর করা ৬ ব্যক্তির মধ্যে রয়েছেন- বিএনপিপন্থি জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি ও এগ্রোনমি অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আলিম, জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. ও প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আমীরুল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয় শাখার জামায়াতে ইসলামী আমির ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন, শাখা জামায়াত সেক্রেটারি ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামরুল আহসান, অফিসার সমিতির বিএনপিপন্থি সভাপতি মোক্তার হোসেন ও জামায়াতপন্থি কোষাধ্যক্ষ মাসুদ রানা।
 
রাবি শাখা জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর মোহাম্মদ অমীরুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রশাসনকে সময় দিয়েছিলাম এবং তারাও আমাদেরকে ১৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানোর কথা বলেছিলেন। কিন্তু সেই তারিখ পার হয়ে গেলেও আমরা কোনো দৃশ্যমান সমাধান দেখতে পাইনি। তাই আমরা প্রশাসনকে আজ ও আগামীকালের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানানোর জন্য বলেছি। অন্যথায় আমরা ২১ তারিখ থেকে আন্দোলনে নামবো।
 
 
ছাত্রশিবির সমর্থিত সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোটের ভিপি পদপ্রার্থী মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, এ বিষয়ে আমরা দ্বিমত পোষণ করছি। কোন মীমাংসিত ইস্যুকে সামনে এনে রাকসু নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্ট করা অথবা ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী ও প্রশাসনকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে রাকসু বানচালের পায়তারা করলে আমরা শিক্ষার্থীরা তা মেনে নেবো না। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে, এইটা নিয়ে কোন ধরনের টাল-বাহানা করলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।
 
শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কর্মসূচির বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি সমাধানের দায়িত্ব প্রশাসনের। আশা করি, নির্বাচনে সবার সহযোগিতা পাব আমরা।
 
রাকসু নির্বাচনে মোট ২৮ হাজার ৯০৫ জন ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে রাকসু, সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি ও হল সংসদ নির্বাচনে মোট ৯০৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।