দীর্ঘ ৩৫ বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ এবং সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ঘোষণায় গোটা ক্যাম্পাসে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ। প্রার্থীদের সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে টানা প্রচারণা। শিক্ষার্থীদের হাত ধরে হাতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে লিফলেট, চলছে আলোচনা, আড্ডা ও নানা রকম আকর্ষণীয় প্রচারাভিযান।
নির্বাচনি আচরণবিধি অনুযায়ী, প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার দিন থেকে ভোটগ্রহণের ২৪ ঘণ্টা পূর্ব পর্যন্ত সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত প্রচারণা চালানো যাবে। পুনর্বিন্যস্ত তফসিল অনুযায়ী মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) পর্যন্ত চলবে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা।
ক্যাম্পাসজুড়ে প্রার্থীদের দেখা যাচ্ছে একাডেমিক ভবন, আবাসিক হল, ক্যাফেটেরিয়া, মেস ও টুকিটাকি চত্বরে ঘুরে ঘুরে প্রচার চালাতে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রার্থীরা তাদের বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন পোস্টার, ভিডিও ও ক্যাম্পেইন কনটেন্টের মাধ্যমে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী নজরুল ইসলাম অডিটোরিয়ামে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীনবরণ অনুষ্ঠানের সময় প্রার্থীদের সরব উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
ছাত্রশিবির সমর্থিত 'সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট' প্যানেলের জিএস প্রার্থী ফাহিম রেজা বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আমাদের বার্তা শুনছেন, প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। দীর্ঘদিন পরে এমন নির্বাচনে অংশ নিতে পারা আমাদের জন্য গর্বের। প্রথমবার ভোট দিতে যাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে।’
ছাত্রদল সমর্থিত ভিপি প্রার্থী শেখ নূর উদ্দীন আবীর বলেন, ‘আমাদের প্যানেল বৈচিত্র্যময়। বিশেষ করে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে আমরা আন্দোলন করেছি, যার ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি।’
বামজোট সমর্থিত 'গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ'-এর ভিপি প্রার্থী ফুয়াদ রাতুল বলেন, ‘স্বল্প জনবল নিয়ে আমরা সবসময় শিক্ষার্থীদের কথা বলেছি। এবারও আমরা গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছি। শিক্ষার্থীরা আমাদের লিফলেট সাদরে গ্রহণ করছেন।’
রাকসু নির্বাচনে ২৩টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২৪৭ জন প্রার্থী। এর মধ্যে ভিপি পদে ১৮, জিএস পদে ১৩ এবং এজিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৬ জন। ছাত্রদল ও শিবির সমর্থিতসহ মোট ১১টি প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও, সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ৫টি পদে ৫৮ জন প্রার্থী ও হল সংসদ নির্বাচনে ১৫টি পদে মোট ১৭টি হলে ৫৯৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
রাকসু নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ২৮ হাজার ৯০১ জন। এর মধ্যে নারী ভোটার ১১ হাজার ৩০৫ এবং পুরুষ ভোটার ১৭ হাজার ৫৯৬ জন। পূনর্বিন্যস্ত তফশিল অনুযায়ী ১৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে ভোটগ্রহণ। গণনা শেষে সেদিনই ফলাফল ঘোষণা করা হবে।