জেমসের কনসার্টে ইটবৃষ্টি, যা জানালেন উপস্থাপক

ফরিদপুর জিলা স্কুলের গৌরবময় ১৮৫ বছর পূর্তি ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের সমাপনী দিনটি আনন্দ উৎসবের বদলে বিষাদে রূপ নিয়েছে। দেশবরেণ্য সংগীতশিল্পী জেমসের গান শোনার অপেক্ষায় যখন হাজার হাজার শিক্ষার্থী প্রহর গুনছিলেন, ঠিক তখনই শুরু হয় ভয়াবহ বিশৃঙ্খলা। বহিরাগতদের ছোড়া ইট-পাটকেলে পণ্ড হয়ে যায় প্রতীক্ষিত এই কনসার্ট।

মঞ্চে থাকা জনপ্রিয় উপস্থাপক শ্রাবণ্য তৌহিদা এই বিভীষিকাময় মুহূর্তের বর্ণনা দিয়ে সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, ‘অনুষ্ঠানটি অত্যন্ত চমৎকারভাবে চলছিল। নগর বাউল জেমস মঞ্চে আসার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। আমি যখন র‍্যাফেল ড্র পরিচালনা করছিলাম, হঠাৎ আকাশ থেকে বৃষ্টির মতো পাথর ও ইট পড়তে শুরু করে। একটি বড় পাথর ঠিক আমার সামনে এসে পড়ে।’

তিনি আরও জানান, প্রায় ১৫ হাজার মানুষের ভিড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছিল আয়োজকরা। ইটের আঘাতে অনুষ্ঠানস্থলেই অনেক শিক্ষার্থী রক্তাক্ত হন।

আয়োজক কমিটি সূত্রে জানা গেছে, অনুষ্ঠানটি ছিল শুধুমাত্র নিবন্ধিত প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্রদের জন্য। কিন্তু জেমসের কনসার্টের খবর শুনে হাজার হাজার অনিবন্ধিত বহিরাগত দর্শক স্কুলের সামনে ভিড় করেন। ভেতরে ঢুকতে বাধা পেয়ে তারা একপর্যায়ে দেয়াল টপকানোর চেষ্টা করেন এবং ব্যর্থ হয়ে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের দিক থেকে মঞ্চ লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। এতে আয়োজক কমিটির আহ্বায়কসহ অন্তত ২৫-৩০ জন আহত হন।

পরিস্থিতি বেগতিক দেখে নিরাপত্তার স্বার্থে দ্রুত জেমসকে অনুষ্ঠানস্থল থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, কড়া নিরাপত্তার মধ্যে তড়িঘড়ি গাড়িতে উঠে এলাকা ত্যাগ করছেন এই রকস্টার। 

এদিকে, এই ঘটনায় ৫ জনের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়লে জেলা পুলিশ তা নাকচ করে দেয়। পুলিশ নিশ্চিত করেছে, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইটের আঘাতে অনেকে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন, তবে নিহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

দীর্ঘ তিন ঘণ্টা অনিশ্চয়তার পর নিরাপত্তাজনিত কারণে শেষ পর্যন্ত উৎসবটি স্থগিত ঘোষণা করতে বাধ্য হন আয়োজকরা।