বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেত্রী রেখা। দীর্ঘ চার দশকের বেশি সময় ধরে চলচ্চিত্রে আলো ছড়ালেও তার ব্যক্তিগত জীবন বারবার এসেছে বিতর্কের কেন্দ্রে। বিশেষ করে ১৯৯০ সালে ব্যবসায়ী মুকেশ আগরওয়ালের সঙ্গে বিয়ের পর ঘটে যাওয়া ঘটনা আজও আলোচনায়। কারণ, সেই বিয়ের পর আর কখনো বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হননি রেখা।
১৯৯০ সালে দিল্লিভিত্তিক ব্যবসায়ী মুকেশ আগরওয়ালের সঙ্গে পরিচয় হয় রেখার। অল্প সময়ের মধ্যেই দু’জন বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। অনেকেই মনে করেছিলেন, অবশেষে স্থায়ীভাবে ঘর বাঁধতে চলেছেন বলিউডের চিরসুন্দরী। কিন্তু বাস্তবতা ছিল ভিন্ন।
এক সাক্ষাৎকারে রেখা জানান, ‘এটা প্রেম ছিল না। মুকেশকে আমার অপরিচিতই মনে হয়েছিল।’ তিনি আরও বলেন, মধুচন্দ্রিমার সময়েই বোঝেন- তাদের জীবনের ধরণ, রুচি ও মানসিকতার মাঝে আকাশ-পাতাল ফারাক।
বিয়ের মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই ভেঙে পড়ে সম্পর্ক। রেখার দাবি অনুযায়ী, ডিভোর্সের প্রস্তাব প্রথম দেন মুকেশই। কিন্তু সম্পর্কের অবসান ঘটে আরও ভয়াবহভাবে- ১৯৯০ সালের ২ অক্টোবর মুকেশ আত্মহত্যা করেন। সে সময় রেখা ছিলেন লন্ডনে।
মুকেশের মৃত্যুর পর সমাজ ও গণমাধ্যমের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন রেখা। অনেকেই তাকে দায়ী করতে থাকেন, এমনকি ‘ডাইনি’ বলেও আখ্যা দেন কিছু গণমাধ্যম। ‘আমি মুকেশকে হত্যা করিনি’
একপর্যায়ে চাপ সামলাতে রেখা একটি খোলামেলা সাক্ষাৎকারে অংশ নেন, যার শিরোনাম ছিল- ‘আমি মুকেশকে হত্যা করিনি’। সেখানে তিনি নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন। কিন্তু ততদিনে জনমত অনেকটাই তৈরি হয়ে গিয়েছিল তার বিরুদ্ধে।
রেখা বলেন, ‘প্রথমে ছিল প্রবল ধাক্কা, তারপর অস্বীকার। এরপর এলো প্রচণ্ড রাগ। বারবার বোঝার চেষ্টা করেছি, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছি। শেষ পর্যন্ত মেনে নেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না।’
২০০৪ সালে সিমি গারেওয়ালের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে রেখা বলেন, ‘এটা যতই ভয়ঙ্কর শোনাক না কেন, আমার কাছে ওটাই ছিল জীবনের সেরা শিক্ষা। আমি নিমিষে বুঝে গিয়েছিলাম মানুষ আসলে কী।’
তিনি সেই ঘটনার পর থেকে আর বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত নেন এবং আজও সে অবস্থানে অটল রয়েছেন।
মুকেশ আগরওয়ালের সঙ্গে সেই সংক্ষিপ্ত ও ঝড়বিক্ষুব্ধ দাম্পত্য জীবন রেখার জীবনে গভীর প্রভাব ফেলেছে। অনেক বিতর্ক, সমালোচনা ও মানসিক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়েও রেখা নিজের অবস্থান ধরে রেখেছেন, রয়ে গেছেন বলিউডের এক অনন্য রহস্যময়ী আইকন।