শহীদ মিনারে অন্তিম শ্রদ্ধায় সিক্ত ফরিদা পারভীন

সদ্য প্রয়াত সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীনকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষ ফরিদা পারভীনকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শিল্পীকে কুষ্টিয়ায় তার মা-বাবার কবরের পাশে দাফন করা হবে।

রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) বৃষ্টির কারণে কিছুটা সময় বিলম্ব করে দুপুর ১২টার পর শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাখা হয় শিল্পীর মরদেহ। এদিন মুষলধারে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে প্রিয় শিল্পীকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ছুটে আসেন অগুণতি মানুষ।

সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে বাদ জোহর অনুষ্ঠিত হয় তার নামাজে জানাজা। জানাজা শেষে লাশবাহী গাড়িতে করে শিল্পীর মরদেহ কুষ্টিয়ায় পথে রওনা হয়েছে।  

ফরিদা পারভীনের মরদেহ কুষ্টিয়া পৌঁছানোর পর সেখানে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর কুষ্টিয়া পৌর কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরে ফরিদা পারভীনকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে।

রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রোববার সকাল সাড়ে দশটা থেকে শিল্পীকে অন্তিম শ্রদ্ধা জানাবেন সকলে। এরপর কুষ্টিয়ায় মা–বাবার কবরের পাশে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে।

গত ৫ জুলাই গুরুতর অসুস্থ হয়ে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ফরিদা পারভীন। অবস্থার অবনতি হলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। কিছুটা সুস্থ হয়ে ২১ জুলাই তিনি বাড়ি ফেরেন। তবে ২ সেপ্টেম্বর ফের অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। শারীরিক অবস্থার ক্রমাগত অবনতির কারণে ১০ সেপ্টেম্বর থেকে তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।

সবশেষ শনিবার রাত ১০টা ১৫ মিনিটে রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭১ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

ফরিদা পারভীনের জন্ম ১৯৫৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর, নাটোরে। ১৯৬৮ সাল থেকে তার সংগীতজীবনের শুরু। নজরুলসংগীত ও দেশাত্মবোধক গান গাইলেও তিনি মূলত লালনগীতির শিল্পী হিসেবেই দেশ-বিদেশে খ্যাতি লাভ করেন। সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য ১৯৮৭ সালে একুশে পদক এবং ১৯৯৩ সালে শ্রেষ্ঠ প্লেব্যাক গায়িকা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। এ ছাড়া ২০০৮ সালে তিনি জাপান সরকারের সম্মানজনক 'ফুকুওকা এশিয়ান কালচার' পুরস্কারে ভূষিত হন।