প্রেমের মূল অর্থ একই আছে এবং প্রেমপত্র এখনও অর্থবহ হতে পারে, তবে এর স্থান এখন আধুনিকীকরণে পরিবর্তন হয়েছে। ‘চিঠির প্রেম ফিরবে না আর’ এই কথার অর্থ এটাই যে, আধুনিক যুগে হাতে লেখা চিঠির মাধ্যমে প্রেম বা আবেগ প্রকাশের ঐতিহ্য কমছে, কারণ ডিজিটাল যোগাযোগের কারণে এর ব্যবহার প্রায় নেই বললেই চলে। চিঠির মাধ্যমে প্রেমের প্রকাশ কমে গেছে, কিন্তু প্রেমের মূল অনুভূতি বা প্রকাশ করার ক্ষমতা ‘চিঠি’ নামক উপায়ের মধ্যে এখনও বিদ্যমান।
তবে প্রযুক্তির ব্যবহার হারিয়ে গেছে চিঠির প্রয়োজনীয়তা। প্রযুক্তি ও সময়ের সাথে সাথে মানুষের সম্পর্কের প্রকাশভঙ্গিতে পরিবর্তন এসেছে এবং চিঠির ব্যবহার আগের মতো নেই বললেই চলে।
চিঠির প্রেম কি আসলেই নেই?
অনেক মানুষ মনে করেন, ডিজিটাল মেসেজের তুলনায় হাতে লেখা চিঠি অনেক বেশি শক্তিশালী এবং অর্থপূর্ণ হতে পারে। বর্তমানে প্রেম প্রকাশের জন্য মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমোজি ও ভয়েস মেসেজ।
ফোন নষ্ট হলে মেসেজ মুছে যেতে পারে, কিন্তু একটি হাতে লেখা চিঠি বছরের পর বছর ডায়েরির পাতায় স্মৃতি হিসেবে থেকে যায়।
যদিও ডিজিটাল যুগে চিঠির ব্যবহার কম, তবে হাতে লেখা চিঠি আজও মানুষের হৃদয়কে স্পর্শ করে এবং সম্পর্কের মধ্যে গভীরতা যোগ করে।
চিঠির ভালোবাসায় রাত জেগে লেখা
চিঠির ভালোবাসায় রাত জেগে লেখা হতো। গভীর আবেগ নিয়ে হারিকেন বা কেরোসিন বাতির মৃদু আলোয় লেখা হতো একেকটি প্রেমপত্র। একেকটি বাক্যে মিশে যেত হৃদয়ের অস্থিরতা। অক্ষরের আড়ালে চাপা থাকত অভিমান, প্রকাশ পেতো লুকানো স্বপ্ন।
নানা রঙের লেখনি
এই চিঠি লেখার জন্য বাজারে পাওয়া যেত নানা রঙের, নানা ডিজাইনের প্যাড। সাদা, নীল, গোলাপি কিংবা ফুলেল নকশার কাগজ ও বিভিন্ন রঙের কলম যা দিয়ে লেখা হতো সেই চিঠি। অনেক সময় প্রেমপত্রে রাখা হতো শুকনো গোলাপের পাপড়ি, কিংবা বকুল ফুল—যেন অক্ষরের সঙ্গে মিলেমিশে সুবাসও পৌঁছে যায় প্রিয়জনের কাছে।
এখন আর পত্র লেখার সেই নেই, আছে রাত জেগে ফোনে গল্প আর মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমোতে মেসেজ। আধুনিক যুগে এখন আর চিঠির উত্তরের অপেক্ষায় থাকা লাগে না, সহজেই বিনিময় হয়ে যায় মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট এবং সোশ্যাল মিডিয়া।